আমেরিকার সঙ্গে প্রাথমিকভাবে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরে প্রস্তুত ভারত। সেই চুক্তি ‘প্রায় তৈরি’-ও আছে। তবে আগামী নির্বাচনের আগে ঘরোয়া রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আমেরিকার উপর সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি ছাড়া হয়েছে। মঙ্গলবার এমনই দাবি করলেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল।
আমেরিকা-ভারত স্ট্র্য়াটেজিক পার্টনারশিপ ফোরামের বার্ষিক শীর্ষ বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যা ঠিক করেছিলাম, তার ভিত্তিতে আমি আগামিকালই (বুধবার) (চুক্তি) স্বাক্ষর করতে তৈরি আছি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার ববের (মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটহাইজার) উপর ছেড়ে দিয়েছে আমি।’
গোয়েলের বক্তব্য, ভবিষ্যতে বৃহদাকারে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে ‘ভিত্তি’ হবে এই প্রাথমিক চুক্তি। সেই চুক্তি অনুযায়ী, ভারতীয় দুগ্ধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্ষেত্রে মার্কিন সংস্থাকে বাড়তি ছাড় দেওয়ার পরিবর্তে ভারতকে আমেরিকায় বিশেষ বাণিজ্য সুবিধা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়াও আরও একাধিক জরুরি বিষয় রয়েছে সেই চুক্তিতে।
যদিও গত ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের সময়ই দু'পক্ষ 'আদর্শগতভাবে' সেই চুক্তি সই করতে পারত বলে মনে করেন গোয়েল। তিনি জানান, কয়েকটি খুচখাচ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ায় সেই যাত্রায় বাণিজ্য চুক্তি অধরাই থেকে যায়। কিন্তু তারপর দু'দেশই করোনাভাইরাস মহামারীর নিয়ন্ত্রণে যাবতীয় মনোযোগ দেওয়ায় বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে দরকষাকষির প্রক্রিয়া ধাক্কা খায়। ভারতের প্রথম দিকের লকডাউন প্রসঙ্গ তুলে গোয়েল বলেন, ‘ওই সময়ে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট হয়েছে।’
তা সত্ত্বেও বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আসলে এই প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তি সংক্রান্ত অধিকাংশ বিষয়গুলির সমাধান করে নিয়েছি।’ লাইটহাইজারের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলোচনার ভিত্তিতে গোয়েল জানান, প্রাথমিক চুক্তির বিষয়টি সম্পন্ন করতে তৈরি দু'পক্ষ। তিনি বলেন, পুরো প্যাকেজটি ‘প্রায় তৈরি এবং যে কোনও সময় চূড়ান্ত হতে পারে, যখন আমেরিকার স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূল হবে।’
গোয়েল বলেন, 'আমরা ভারতের তরফে বিশ্বাস করি যে এটা (বাণিজ্য চুক্তি) উভয় দেশের পক্ষেই ভালো হবে। তা আরও বৃহদাকারে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য আলোচনা শুরুর দরজা খুলে দেবে।' একইসঙ্গে প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তির উপর ভিত্তি করে ইন্দো-মার্কিন 'কৌশলগত সম্পর্ক আরও গভীর হবে' বলে আশাপ্রকাশ করেছেন গোয়েল।