সদ্য বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি পাকিস্তানে গোটা একটি ট্রেন অপহরণ করে। সেই হাইজ্যাক কাণ্ডে ৩০ ঘণ্টার পর যাত্রীদের উদ্ধার করেছে পাকিস্তান। এদিকে, পাকিস্তান সদ্য ইঙ্গিতবহ বার্তায় ভারতের দিকে আঙুল তুলেছিল। প্রসঙ্গত, বালুচিস্তানের বিদ্রোহীদের এই ট্রেন অপহরণ কাণ্ড ঘিরে সরব হয়েছিল পাকিস্তান। তার পাল্টা জবাবে সন্ত্রাস নিয়ে ইসলামাবাদকে জোরালো বার্তা দিয়ে ভারত নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিল।
ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতি প্রকাশ করে সাফ কথায় বলা হয়েছে,'পাকিস্তানের ভিত্তিহীন দাবিকে আমরা কড়া ভাষায় নস্যাৎ করছি। গোটা বিশ্ব জানে গ্লোবাল সন্ত্রাসের কেন্দ্রস্থল কোথায়, অন্যের দিকে আঙুল না তুলে, নিজের ব্যর্থতার দায় অন্যের ঘাড়ে না চাপিয়ে পাকিস্তানের উচিত নিজের দিকে তাকানো।' এর আগে পাকিস্তানের তরফে সেদেশের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র শফাকত আলি খান দাবি করেন, আফগানিস্তানে মাস্টারমাইন্ডদের সঙ্গে যোগ রেখেছিল পাকিস্তানে ট্রেন হাইজ্যাক কাণ্ডের বালোচ আর্মির সদস্যরা। সাপ্তাহিক এক ব্রিফিংএ তিনি বলেন,' দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের অঞ্চলে শান্তির বিরুদ্ধে অনেক শক্তি রয়েছে যারা সন্ত্রাস দমন এবং একটি শান্তিপূর্ণ অঞ্চল গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের অভূতপূর্ব এবং আন্তরিক প্রচেষ্টার সুফল দেখতে চায় না। জাফর এক্সপ্রেসের এই নির্দিষ্ট হামলায় জঙ্গিরা তাদের বাইরের রিং লিডার ও হ্যান্ডেলারদের সঙ্গে যোগ রেখেছিল।' তিনি বলেন,পুরো ঘটনা জুড়ে সন্ত্রাসীরা আফগানিস্তান-ভিত্তিক পরিকল্পনাকারীদের সাথে সরাসরি যোগাযোগে ছিল। সংবাদ সংস্থা এএনআই তাঁকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, সাপ্তাহিক এক ব্রিফিং শফাকত আলি খান দাবি করেন,' পাকিস্তানে সন্ত্রাসে যুক্তি ভারত।'
এদিকে, পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আফগানিস্তানের সংঘাত রয়েছে। পাকিস্তানে শাহবাজ শরিফের সরকার দাবি করছে, তেহরিক-এ তালিবান, আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে পাকিস্তানে হামলা করছে। যদিও কাবুল সেই দাবি নস্যাৎ করেছে। এদিকে, সদ্য পাকিস্তানে ৪০০ যাত্রী নিয়ে সফররত জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি অপহরণ করে বালোচ যোদ্ধারা। তাদের হাত থেকে পণবন্দিদের উদ্ধার করতে ৩০ ঘণ্টা সময় নেয় পাকিস্তানের সেনা। পাকিস্তানের সেনার দাবি, তারা ৩৩ জন বালোচ যোদ্ধাকে সেই ঘটনায় নিকেশ করেছে। কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী এই ট্রেনে বহু পাক সেনার সদস্য ছিল বলে একাধিক মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হয়। এদিকে, যে পাকিস্তানি যাত্রীরা ওই ট্রেনের বালোচ যোদ্ধাদের কবল থেকে মুক্তি পান, তাঁরা জানান, ট্রেনে মহিলা, শিশু ও বয়স্কদের স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেয় বিএলএ। এদিকে, ঘটনাস্থলে সেদিন কী হয়েছে, তা দেখার জন্য নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক ও স্বাধীন সাংবাদিকদের সংঘাতস্থলে নিয়ে যাওয়ার জন্য পাকিস্তানের প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ করেছে বিএলএ।