গাজায় শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য মিশরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত থাকবে ভারত। বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং সোমবার মিশরের শর্ম এল-শেখ শহরে একটি শান্তি সম্মেলনে যোগ দেবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মিশরের প্রধানমন্ত্রী আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এই সম্মেলনে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সহ আরও ২০ জন বিশ্ব নেতা এই সম্মেলনে অংশ নেবেন বলে জানা যাচ্ছে। এই আবহে কীর্তি বর্ধন সিংকে ভারতের বিশেষ প্রতিনিধি হিসাবে সম্মেলনে যোগ দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এই বিষয়ে কীর্তি বলেন, 'শার্ম এল-শেখে গাজা শান্তি সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে আমি ঐতিহাসিক কায়রো শহরে এসেছি। মিশরের প্রেসিডেন্টের আয়োজনে শার্ম আল-শেখ শান্তি সম্মেলন হচ্ছে। এখানে গাজা ও মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার উপায় নিয়ে আলোচনা করা হবে। এর যৌথ সভাপতিত্ব করবেন আল-সিসি ও ট্রাম্প।'
সূত্রের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফেরও এই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে কীর্তি বর্ধন সিংকে সেখানে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ভারতের তরফ থেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্মকর্তা জানান, ট্রাম্প ও শরিফ একই মঞ্চে এলে কী ঘটবে, তা নিয়ে ঝুঁকি নিতে চায় না ভারত। এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কির স্টারমার, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসও এই সম্মেলনে অংশ নেবেন।
সম্মেলন নিয়ে মিশরের তরফ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'এই শীর্ষ সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি আবদেল ফাত্তাহ এল-সিসি এবং মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প সভাপতিত্ব করবেন এবং এতে ২০টিরও বেশি দেশের নেতারা অংশ নেবেন। গাজা উপত্যকায় যুদ্ধের অবসান এবং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা জোরদার করাই এই সম্মেলনের লক্ষ্য।' প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ কার্যকর হওয়ার কয়েকদিন পর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রসঙ্গত, গত ১০ অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। হামাস আজ, সোমবার সকালে প্রায় ২০ জন জীবিত বন্দিকে মুক্তি দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলি শহরগুলিতে আক্রমণ করে প্রায় ১২০০ লোককে হত্যা করেছিল হামাস। এরপরই ইজরায়েল গাজায় আক্রমণ শুরু করে। হামাস ২৫১ জনকে বন্দি করেছিল সেই হমলায়। তাদের মধ্যে ৫০ জনেরও বেশি এখনও তাদের কব্জায় রয়েছে। এদিকে গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইজরায়েলি সামরিক অভিযানে এখনও পর্যন্ত ৬৬ হাজারেরও বেশি গাজাবাসী নিহত হয়েছে।