মার্কিন প্রশাসনের শীর্ষ স্থানীয় স্বাস্থ্য আধিকারিক ডঃ অ্যান্থনি ফাউসি সেদেশের সেনেট সদস্যদের জানালেন যে আগেভাগে লকডাউন তুলে নেওয়া এবং অসচেতনতার জেরেই ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এদিন মার্কিন আইন প্রণেতাদের স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানান, করোনার সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করার জেরেই ভারতে আগেভাগে সব খুলে দেওয়া হয়েছিল। আর এই কারণেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এভাবে ছড়িয়ে পড়েছে দেশে।
সেনেটের শুনানি চলাকালীন প্রশ্ন করা হয় যে আমেরিকা ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে কী শিখতে পারে। এর জবাবে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশন ডিজিজ-এর প্রধান তথা মার্কিন প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্য বিষয়ক মুখ্য পরামর্শদাতা অ্যান্থনি ফাউসি বলেন, 'ভারতে প্রাথমিক যেই করোনা ঢেউ আছড়ে পড়েছিল, সেই সম্পর্কে তারা ভুল ধআরণা পোষণ করেছিল যে সংক্রমণ আর ফিরে আসবে না। এই কারণেই বর্তমানে ভারতের এই বেহাল দশা।'
তিনি আরও বলেন, 'ভারত আগেভাগেই সব খুলে দিয়েছিল এবং এর জেরে বর্তমানে সেখানে সংক্রমণ এক দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে।' উল্লেখ্য, সত্যি কথা কোনও লুকোচুরি বলার জন্যে পরিচিত ডঃ ফাউসি। আর এর জন্যই প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বনিবনা হত না।
ভারতের থেকে শিক্ষা নেওয়ার বিষয়ে ফাউসি বলেন, 'আমাদের স্থানীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও পোক্ত করতে হবে। গত এক দশকে আমরা এই দিকে খুব একটা নজর দেইনা আর তাই এটি পিছিয়ে পড়েছে।' এছাড়া তিনি আরও বলেন, 'বিশ্বব্যাপী একটি অতিমারী রুখতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমাদের ভূমিকা পালন করতে হবে। ভারতে নতুন যে ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মিলেছে, তার জেরে আমেরিকাও ঝুঁকির সম্মুখীন।'
এদিকে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল বা সিডিসির প্রধান রশেল ওয়ালেনস্কি বলেন, 'ভারতকে দেখে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে যে কী করতে হবে এবং কী করা থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। আমরা সতর্ক কিন্তু আশাবাদী। তবে বিশ্বব্যাপী এই সংক্রমণ আগের তুলনায় অনেক বেশি করে ছড়াচ্ছে। যদি আমরা আরও সতর্ক না হই তাহলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে।'
এদিকে ইতিমধ্যে সিডিসির পরামর্শে ভারত থেকে উড়ান বাতিল করে দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে এখনও পর্যন্ত সেদেশে ১৫২ মিলিয়ন মানুষ টিকার অন্তত একটি ডোজ পেয়েছে। এটা তাদের মোট জনসংখ্যার ৪৬ শতাংশ। এবং ১৮ ঊর্ধ্ব জনসংখ্যার নিরিখে এটা ৫৭.২ শতাংশ। সেদেশেও এখনও শিশুদের করোনা টিকা দেওয়া হচ্ছে না।