গম আর করোনা টিকা একই মনে করবেন না। খাদ্যশস্যের মজুতদারি এবং বৈষম্যের বিষয়ে ধনী দেশগুলিকে সতর্ক করল ভারত। বুধবার রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের বার্তা, খাদ্যশস্যকে কোভিড ভ্যাকসিনের মতো করে একইভাবে দেখা উচিত নয়।
ভারত পশ্চিমী দেশগুলিকে এ বিষয়ে সংবেদনশীল হওয়ার আহ্বান করেছে। ভি মুরালীধরন বলেন, করোনার ভ্যাকসিনের সময়ে ধনী দেশগুলো তাদের প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি বেশি করে কিনেছে। এর ফলে দরিদ্র ও স্বল্পোন্নত দেশগুলি সমস্যায় পড়ে। তারা তাদের জনগণকে প্রথম ডোজ দিতে হিমসিম খেয়েছে।
মুরালীধরন বলেন, 'আমরা দেখেছি যে কীভাবে COVID-19 ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে সমস্ত নীতি উপেক্ষা করা হয়েছিল। খোলা বাজারে বৈষম্য দূর করার লক্ষ্য থাকলে, এগুলি করা উচিত নয়।'
'অনেক নিম্ন-আয়ের দেশেই দিন দিন খরচের পরিমাণ বাড়ছে। সেই সঙ্গে রয়েছে পর্যাপ্ত খাদ্যশস্যের জোগানের অভাব। জোড়া চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তারা,' বলেন কেন্দ্রীয় বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি মুরালীধরন। বুধবার নিউ ইয়র্কে 'গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি - কল টু অ্যাকশন' শীর্ষক একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ভারতীয়রা পর্যাপ্ত মজুত থাকা সত্ত্বেও খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধির সম্মুখীন হচ্ছেন। এর থেকে এটা স্পষ্ট যে অনেকে জমিয়ে রাখছে। আর সেই বিষয়টাকে আমরা এভাবে উপেক্ষা করতে পারি না।
গত সপ্তাহে শুক্রবার গমের রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। প্রচণ্ড গরমের কারণে গমের ফলন হ্রাস পেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের অভ্যন্তরে গমের সরবরাহ নিশ্চিত করতেই এমন সিদ্ধান্ত।
তবে এর ফলে চাপে বহু পশ্চিমী দেশ। এমনিতেই ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে গমের সরবরাহ সংকটে। তার মধ্যে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা ভারতের রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত।
মুরালীধরন বলেন, ভারত সরকার বিশ্বব্যাপী গমের দামের আকস্মিক বৃদ্ধি লক্ষ্য করেছে। এটি আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা এবং আমাদের প্রতিবেশী ও অন্যান্য দুর্বল দেশগুলির খাদ্য নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে তুলেছে।
ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড (DGFT) গত সপ্তাহে একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া অনুমতির ভিত্তিতে গম রপ্তানির ছাড়পত্র দেওয়া হবে। মন্ত্রী বলেন যে সব দেশের সত্যিকারের প্রয়োজন, তারা যাতে গম পায়, সেটা নিশ্চিত করবে ভারত। কিন্তু যারা শুধু মজুত করে রাখতে চায়, তাদের কার্যকলাপে রাশ টানতে চায় ভারত। এই বিষয় যে দেশ পশ্চিমের চাপের কাছে মাথা নত করবে না, এদিন কার্যত সেটা বুঝিয়েই দিলেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী।