'ফার্স্ট কাম, ফার্স্ট সার্ভ' নীতিতেই কি বণ্টন হবে স্যাটেলাইট স্পেকট্রাম? এবার এই নিয়ে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। শুক্রবার এই নিয়ে মন্ত্রী স্পষ্ট বলে দিলেন, যে প্রথমে আসবে, তাকেই যে স্যাটেলাইট স্পেকট্রাম বণ্টনে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, এমন কোনও কথা নেই। টাইমস নেটওয়ার্কের 'ইন্ডিয়ান ইকোনমিক কনক্লেভে' সিন্ধিয়া বলেন, 'বৈজ্ঞানিক সীমাবদ্ধতার কারণে স্যাটেলাইট পরিষেবার জন্য স্পেকট্রাম নিলাম করা সম্ভবপর ছিল না।'
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেন, 'বিশ্বের কোনও দেশই স্যাটেলাইট নিলাম করে না কারণ এটি আক্ষরিক অর্থে অসম্ভব। স্যাটেলাইট স্পেকট্রাম বণ্টনের ক্ষেত্রে এখন মূল্য নির্ধারণ করবে ভারতের টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি। এবং তার ভিত্তিতেই স্পেকট্রাম বরাদ্দ করা হবে প্রত্যেককে। যারা লাইসেন্স সংগ্রহ করবে, তাদেরকে তা বরাদ্দ করা হবে।']
সম্প্রতি ভারতে ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানে ইলন মাস্ক আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এই আবহে ভারতও কয়েকদিন আগে জানিয়ে দেয় যে স্যাটেলাইট স্পেকট্রাম বণ্টনের ক্ষেত্রে নিলাম হবে না। বরং প্রশাসনিক ভাবে বণ্টন করা হবে স্পেকট্রাম। এর আগে টেরেস্ট্রিয়াল স্পেকট্রামের বণ্টন নিলামের ভিত্তিতে হত। জিও এবং এয়ারটেল এই পদ্ধতিকেই বেশি পছন্দ করে থাকে। তবে বরাবরই এই নিমাল পন্থার বিরোধিতা করে এসেছেন ইলন মাস্ক। প্রসঙ্গত, স্টারলিংকের হাত ধরে ভারতীয় টেলিকম মার্কেটে প্রবেশের ওপরে বেশ কয়েকদিন ধরেই নজর রয়েছে মাস্কের।
উল্লেখ্য, বিশ্বের প্রায় সর্বত্রই প্রশাসনিক ভাবে স্যাটেলাইট স্পেক্ট্রাম বণ্টন করা হয়ে থাকে। তবে ভারতে স্যাটেলাইট স্পেকট্রামের নিলাম চেয়েছিলেন মুকেশ আম্বানি। পাশাপাশি এয়ারটেলের ভারতী সুনীল মিত্তলও এই পদ্ধতিকেই সমর্থন করেন। তবে অ্যামাজনের প্রোজেক্ট কুইপার থেকে স্টারলিংক চাইছিল যাতে ভারতে প্রশাসনিক ভাবেই স্যাটেলাইট স্পেকট্রাম বণ্টন হয়। উল্লেখ্য, ভারত ইন্টারন্যাশনাল টেলিকম ইউনিয়নের সদস্য। এটি রাষ্ট্রসংঘের একটি সংস্থা। এই সংস্থার সদস্য হওয়ার সুবাদে ভারতের আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে স্যাটেলাইট স্পেক্ট্রাম বণ্টন করা উচিত বলে দাবি করেছিলেন মাস্ক। এই আবহে সম্প্রতি টেলিকম মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ঘোষণা করেন, বিশ্বের বাকি জায়গার মতো ভারতেও এখন থেকে প্রশাসনিক ভাবে স্যাটেলাইট স্পেক্ট্রাম বণ্টন হবে।
এই আবহে রিপোর্টে দাবি করা হয়, মুকেশ আম্বানি নাকি সেই প্রশাসনিক বণ্টন প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করেন। রিলায়েন্সের দাবি, বাজারে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে স্যাটেলাইট স্পেক্ট্রামেরও নিলাম হওয়া উচিত। এই নিয়ে টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া বা ট্রাইকে চিঠি লিখেছে রিলায়েন্স জিও। সুনীল মিত্তলও একই সুরে কথা বলেছেন। তবে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার বক্তব্য ছিল, 'সারা বিশ্বেই স্যাটেলাইট স্পেকট্রাম প্রশাসনিক ভাবে বণ্টন করা হয়। ভারত এর থেকে আলাদা কিছু করছে না।'