ভারত ও চিনের বিশেষ প্রতিনিধিদের বৈঠকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেগুলিকে কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে জানালেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জানান, মানস সরোবর যাত্রা পুনরায় শুরু করার মতো যে আন্তঃসীমান্ত বিষয়গুলি নিয়ে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, সেগুলিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। তাঁর কথায়, ‘এটার অর্থ হল যে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আর যে আন্তঃসীমান্ত বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, সেটার ভিত্তিতে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
২০২০ সাল থেকে বন্ধ কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা
যদিও ‘পবিত্র’ কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রার বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে কিছু বলেননি ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র। ২০২০ সাল থেকে সেই যাত্রা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যে সময় থেকে লাদাখ সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারত এবং চিনের মধ্যে সামরিক সংঘাত শুরু হয়েছিল। দু'দেশই ৬০,০০০-র মতো জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছিল।
জুনে গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছিল দু'দেশের জওয়ানদের মধ্যে। সেই ঘটনায় ভারতের ২০ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল। মৃত্যু হয়েছিল চিনের কমপক্ষে চার ফৌজির। যদিও একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, আসল সংখ্যাটা অনেক বেশি ছিল। চিনের বিরুদ্ধে আসল হতাহতের সংখ্যা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। যে সংঘর্ষের ঘটনার জেরে ভারত এবং চিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ছয় দশকের সর্বনিম্ন স্তরে নেমে গিয়েছিল।
পরবর্তীতে অবশ্য সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সেই রেশ ধরেই ২১ অক্টোবর লাদাখ সীমান্তের অন্যতম 'সংঘাতের' জায়গা ডেমচক এবং ডেপস্যাং থেকে দু'দেশের সেনা সরানো হয়েছিল। দু'দিন পরেই রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস সম্মেলনের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং একমত হয়েছিলেন যে সীমান্ত সমস্যা মেটাতে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে নতুন করে বিশেষ প্রতিনিধিদের বৈঠক শুরু করা হবে।
বিবৃতি নিয়ে কিছুটা বিতর্ক তৈরি
মোদী এবং জিনপিংয়ের ঐক্যমতের ভিত্তিতে বুধবার বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের বৈঠক সারেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী। পাঁচ বছর পরে সেই স্তরের বৈঠকে ভারত এবং চিনের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে যে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, তা নিয়ে কিছুটা বিতর্ক শুরু হয়। চিনের বিবৃতিতে বলা হয়েছিল যে ছ'টি বিষয় নিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছেছে নয়াদিল্লি এবং বেজিং। ভারতের বিবৃতিতে সেরকম কিছু বলা হয়নি।
আরও পড়ুন: Bangladesh Rickshaw: রিকশা নিয়ে নতুন স্বপ্ন বাংলাদেশে, সহায়তায় দুই চিনা তরুণী
‘আলাদা’ বিবৃতি নিয়ে কী বলল ভারত?
সেই বিষয়টি নিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, বৈঠকে যে যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, সেগুলির বিষয়ে জানানো হয়েছে। আর নয়াদিল্লির বিবৃতি নিয়েই তিনি কথা বলতে পারেন। অন্যদিকে নাম গোপন রাখার শর্তে বিষয়টির সঙ্গে অবহিত আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে ওই ছ'টি বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সেটা নিয়ে যে ঐক্যমতে পৌঁছানো গিয়েছে, সেটা দাবি করা আলাদা ব্যাপার।