কেন ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভারতের কৃষি বিক্ষোভ নিয়ে আলোচনা হল, এই নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিল নয়াদিল্লি। এদিন ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্স এলিসকে ডেকে পাঠিয়ে ভারতের তরফ থেকে এই নিয়ে প্রতিবাদ করা হয়।
প্রায় ১.১৫ লাখ মানুষ পিটিশন করেছিলেন যাতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভারতের কৃষি আইন সংক্রান্ত আন্দোলন নিয়ে আলোচনা হয়। শাসক, বিরোধী সহ বিভিন্ন দলের সাংসদরা বলেন যে বরিস জনসন সরকারের মোদী সরকারের সঙ্গে এই নিয়ে কথা বলা উচিত। শুধু কৃষি আন্দোলন নয় মিডিয়ার স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে, সেই অভিযোগ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন অনেক সাংসদ।
তাঁরা স্বীকার করে নেন যে এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় কিন্তু তাদের ভোটারদের সঙ্গে ভারতের কৃষিক্ষেত্রের গভীর সম্পর্ক আছে বলে তাঁরা জানান। প্রায় কুড়িজন এই নিয়ে আলোচনা করেন। কনজারভেটিভ সাংসদ থেরেসা ভিলিয়ার্স ছাড়া প্রায় সকলেই সোচ্চার হন ভারত সরকারের ভূমিকা নিয়ে। তাদের দাবি কৃষকদের ওপর জোর জবরদস্তি করছে পুলিশ। কেউ কেউ তো মোদী সরকারের ওপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার জন্য সওয়াল করেন!
এদিন ব্রিটেনে রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠান বিদেশসচিব হর্ষ শ্রীংলা। তিনি বলেন যে ব্রিটিশ সংসদে যে ‘অনভিপ্রেত’ ও ‘পক্ষপাতমূলক’ আলোচনা হয়েছে তার কড়া প্রতিবাদ করছে ভারত। এই বিতর্ক অন্য একটি গণতান্ত্রিক দেশের কার্যকলাপে নাক গলানো বলে স্পষ্ট করে বলে নয়াদিল্লি। ভোটব্যাংকের জন্য তথ্য বিকৃত না করতে ব্রিটিশ সাংসদদের পরামর্শ দিয়েছে ভারত।
লন্ডনে স্থিত ভারতীয় মিশনও একই ভাবে বলেছে যে একতরফা ভাবে আলোচনা হয়েছে যেখানে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র ও তার প্রতিষ্ঠানের বিষয় ভিত্তিহীন ভাবে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে কোনও তথ্যপ্রমাণ ছাড়া। এগুলি ব্রিটেনে স্থিত ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা বলে জানিয়েছে ভারত।
ব্রিটেন সরকারের পক্ষ থেকে নাইজেল অ্যাডামস বলেন যে যখন প্রয়োজন তারা উদ্বেগের কথা ভারত সরকারকে জানান, এটা খেয়াল রেখে যে শেষ অবধি কৃষি সংস্কার তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কৃষি আন্দোলনের বিষয়টি যে তারা খুব গভীর ভাবে নজর রেখেছেন, সেটাও জানান তিনি। কৃষি আন্দোলন ও মিডিয়া স্বাধীনতা নিয়ে যে অনেকের মনে কড়া মতামত আছে, সেটা স্বীকার করে নেন তিনি।
ভারতের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ব্রিটেনের নাগরিকরা যে এই নিয়ে আতঙ্কিত সেটাও বলেন তিনি। ভারতকে সংবিধান স্বীকৃত অধিকার ও স্বাধীনতা সকলকে দিতে আর্জি জানান তিনি। বরিস জনসন যখন ভারতে যাবেন তখনও বিভিন্ন কঠিন বিষয় যে তিনি মোদীর সঙ্গে আলোচনা করবেন, সেটাও জানান অ্যা়ডামস। তিনি বলেন যে বন্ধুর মতো নানান বিষয় নিজেদের মতামত তারা দেন। তবে এই নিয়ে আলোচনা যে ভারত খুব একটা ভালো চোখে দেখেনি, নয়াদিল্লির প্রতিক্রিয়ায় সেটা স্পষ্ট।