ভারতের বিরুদ্ধে দাদাগিরির অভিযোগ তুলেছিলেন শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত চিনা দূতাবাস। তাঁকে পালটা সবক শেখাল ভারত। রীতিমতো কড়া ভাষায় কলম্বোয় ভারতীয় হাইকমিশনের তরফে বলা হল, 'ওঁর নিজের দেশ যেমন আচরণ করে, সেটার প্রভাব হয়ত ওঁর মন্তব্যে পড়েছে। আমরা তাঁকে আশ্বস্ত করছি যে ভারত সম্পূর্ণ আলাদা।'
শুক্রবার শ্রীলঙ্কায় সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি চিঠিতে চিনা দূত কিউ ঝেনগং দাবি করেছিলেন, হাম্বানটোটা বন্দরে চিনা জাহাজের নোঙর করা নিয়ে ‘অযৌক্তিক হস্তক্ষেপ’ করছে দ্বীপরাষ্ট্রের 'উত্তরাংশের প্রতিবেশী'। তাইওয়ানে মার্কিন সংসদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফরের সময় যেভাবে বেজিং বিরোধিতা করেছিল, সেই ঘটনার সঙ্গে হাম্বানটোটো বন্দরে গুপ্তচর জাহাজ নোঙর নিয়ে যৌথভাবে শ্রীলঙ্কা এবং চিন 'তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ' রুখে দিয়েছে বলে দাবি করেন ঝেনগং।
শনিবার রাতের দিকে কলম্বোয় ভারতীয় হাইকমিশনের তরফে কড়া ভাষায় সেই মন্তব্যের পালটা দেওয়া হয়। একটি বিবৃতিতে কলম্বোয় ভারতীয় হাইকমিশনের তরফে বলা হয়, ‘আমরা চিনা দূতের মন্তব্য দেখেছি। ন্যূনতম কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘনের মাধ্যমে তাঁর ব্যক্তিগত চরিত্র বা বৃহত্তর জাতীয় মনোভাব (চিনের) ফুটে উঠছে। ওঁর নিজের দেশ যেমন আচরণ করে, সেটার প্রভাব হয়ত ওঁর মন্তব্যে পড়েছে। আমরা তাঁকে আশ্বস্ত করছি যে ভারত একেবারে আলাদা।'
কূটনৈতিক মহলের মতে, সরাসরি পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর চিনা আগ্রাসনের কথা বলা না হলেও কলম্বোয় ভারতীয় হাইকমিশনের ইঙ্গিতটা ছিল সেদিকেই। অর্থাৎ বার্তাটা স্পষ্ট ছিল, ভারত নয়, আগ্রাসন দেখায় চিন। সেইসঙ্গে কলম্বোয় ভারতীয় হাইকমিশনের তরফে বলা হয়, '(বর্তমানে) শ্রীলঙ্কার সাহায্যের দরকার। অপর কোনও দেশের স্বার্থ চরিতার্থের জন্য অযাচিত কোনও চাপ বা অহেতুক কোনও বিতর্ক চাই না।'
চিনা জাহাজ
যে জাহাজকে ঘিরে কূটনৈতিক চাপানউতোর, সেটি ইউয়ান ওয়াং সিরিজের তৃতীয় জেনারেশনের জাহাজ। স্যাটেলাইট এবং মিসাইলের গতিপথ ট্র্যাক করার জন্য এই জাহাজের প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই জাহাজে রয়েছে এমন কিছু শক্তিশালী ব়্যাডার, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে নজরদারিতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ওই জাহাজকে শ্রীলঙ্কার বন্দরে এনে ভারতের উপকূলবর্তী এলাকার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের কোনও তথ্য হাতানোর পরিকল্পনা করেছে চিন। যে জাহাজ গত ১৬ অগস্ট হাম্বানটোটা বন্দরে এসে পৌঁছেছিল।