৩,৫০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে এবং পারমাণিকভাবে সক্ষম, কে-৪ সাবমেরিন-লঞ্চ্ড ব্যালিস্টিক মিসাইল (এলবিএম)-এর সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করল ভারত।
বুধবার নৌবাহিনীর নয়া সদস্য আইএনএস অরিঘাত থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্রটির পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হয়।
বৃহস্পতিবার এই প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর তরফে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, সেই অনুসারে, এই উৎক্ষেপণ সফল হলেও এখনও এর বিস্তারিত বিশ্লেষণ চলছে।
ভারতীয় নৌবাহিনীর পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে - এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সফল হয়েছে এবং তার বিশ্লেষণ চলছে। সূত্রের দাবি, স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ড-এর মাধ্যমে ওই ডুবোজাহাজ থেকে এই পরীক্ষা চালানো হয়।
পরবর্তীতে এএনআই-এর তরফে আরও জানানো হয়েছে, ওই ক্ষেপণাস্ত্রের সম্পূর্ণ রেঞ্জেরই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। বিশ্লেষণ প্রক্রিয়া শেষ হলেই এ নিয়ে বাহিনীর উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা বক্তব্য পেশ করবেন।
আইএনএস-অরিঘাত হল ভারতের দ্বিতীয় পারমাণবিক শক্তি সমৃদ্ধ ডুবোজাহাজ। গত অগস্ট মাসে এই সাবমেরিনটিকে ভারতীয় নৌবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সামরিক ক্ষেত্রে দেশের পারমাণবিক প্রতিরোধ শক্তি আরও বাড়াতেই এই পদক্ষেপ করা হয়।
যেদিন এই সাবমেরিনটিকে নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল, সেদিন, অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানে যোগদান করেছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং।
আইএনএস অরিঘাত আদতে অরিহন্ত-শ্রেণি দ্বিতীয় জলযান। যা ভারতের অত্যাধুনিক পরমাণু শক্তি সমৃদ্ধ ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন প্রোগ্রামের এক অনন্য নজির।
ভারতের প্রথম পরমাণু শক্তি সমৃদ্ধ আইএনএস অরিহন্ত ২০০৯ সালে লঞ্চ করা হয়েছিল। এবং সেটি বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল ২০১৬ সালে। তবে, সেটি পুরোদস্তুর কাজে লাগানো শুরু হয় ২০১৮ সাল থেকে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দাবি অনুসারে, নয়া আইএনএস অরিঘাত তার পূর্বসূরির তুলনায় অনেক বেশি আধুনিক ও উন্নত। এই ডুবোজাহাজ সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে গড়ে তোলা হয়েছে।
এই শ্রেণির দু'টি ডুবোজাহাজই ৮৩ মেগাওয়াটের প্রেসারাইজড লাইট-ওয়াটার নিউক্লিয়ার রিঅ্য়াক্টর দ্বারা সচল রাখা হয়। যে কারণে এই ডুবোজাহাজ নির্দিষ্ট সময়সীমার দীর্ঘক্ষণ পরও জলের নীচে ডুব থাকতে পারে।
কিন্তু, এত দিন ডিজেল-ইলেক্ট্রিক চালিত সাবমেরিনগুলি ব্যবহার করা হত, সেগুলি এত দীর্ঘ সময় ধরে জলে ডুবে থাকতে পারে না। তাদের নির্দিষ্ট সময় অন্তর জলের উপর ভেসে উঠতেই হয়।
আইএনএস অরিঘাতেও, তার পূর্বসূরি আইএনএস অরিহন্তের মতোই চারটি লঞ্চ টিউব রয়েছে। যেগুলি সর্বোচ্চ ১২টি কে-১৫ সাগরিকা এসএলবিএম বহন করতে সক্ষম। যার পাল্লা ৭৫০ কিলোমিটার। অথবা, এই ডুবোজাহাজগুলি সর্বোচ্চ চারটি কে-৪ এসএলবিএম বহন করতে পারে। যার পাল্লা ৩,৫০০ কিলোমিটার।