শিশির গুপ্ত
দীর্ঘ ন'মাস পিছু হটতে চায়নি। কিন্তু এবার যে গতিতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে নিজেদের বাহিনী সরিয়ে নিচ্ছে চিন, তাতে রীতিমতো অবাক হয়ে গিয়েছেন ভারতীয় সেনা এবং জাতীয় নিরাপত্তার উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। তারইমধ্যে প্যাংগং সো লেক এবং গালওয়ান উপত্যকায় পরিদর্শনে যাওয়ার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় কমিটি। ইতিমধ্যে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
নাম গোপন রাখার শর্তে কেন্দ্রের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, চিনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালদের আলোচনার পর ঐক্যমতে পৌঁছায় নয়াদিল্লি এবং বেজিং। তার ভিত্তিতে গত বুধবার সকাল ন'টা নাগাদ সেই প্যাংগং সো লেক থেকেই সেনা সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। বৃহস্পতিবারের মধ্যেই ২০০ টির বেশি যুদ্ধের ট্যাঙ্ক প্যাংগং সো লেকের দক্ষিণ তীর সরিয়ে নিয়ে যায়। সেই দ্রুততার প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদী সরকারের এক উচ্চপদস্থ কর্তা বলেন, ‘চিনারা যে গতিতে পিছু হটেছে, তাতে ওদের বাহিনী মোতায়েনের ক্ষমতা তুলে ধরে। এটাই সামরিক শিল্প। ভারতীয়রাও নিজেদের বাহিনী পিছিয়ে নিয়ে এসেছে। তবে একেবারে বাজে পরিস্থিতি জন্যও পরিকল্পনা তৈরি আছে।’
সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, গত বছর এপ্রিল যেখানে ছিল দু'দেশের সেনা, তত পর্যন্ত পিছিয়ে যাওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে ভারত এবং চিন। অর্থাৎ উত্তর তীরে ফিঙ্গার ৩-এর ঘাঁটিতে সরে আসবে ভারতীয় সেনা। আর ফিঙ্গার ৮-এর পূর্বে স্রিজাপ সেক্টরে ফিরেযাবে পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। একইভাবে দক্ষিণ তীরে ভারতীয় এবং চিনা সেনা যথাক্রমে চুশুল এবং মলডোতে ফিরে যাবে।
তারইমধ্যে শনিবার প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারপার্সন জুয়েল ওরাম সংবাদসংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন যে সরকারের কাছে আগামী ১৫ মে'র পর গালওয়ান উপত্যকা এবং প্যাংগং সো লেকে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ওরাম বলেছেন, ‘১০ দিন আগে প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই প্রস্তাব দিয়েছেন কয়েকজন সদস্য। আমরা স্পিকারের অনুমতি চেয়েছি। সরকারকে প্রস্তাবটি বিবেচনা করতেও বলেছি।’ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘লাদাখে যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছি আমরা। পরিস্থিতির মূল্যায়ন করে প্রস্তাব বিবেচনা করতে বলেছি। তারপর আমাদের বিষয়টি জানানো হবে।’ যে কমিটিতে আছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী। তবে যেদিন গালওয়ানে যাওয়ার বিষয়ে প্রস্তাব উত্থাপন হয়েছে, সেদিন রাহুল হাজির ছিলেন না বলে দাবি করেছেন ওরাম।
(অতিরিক্ত তথ্য এএনআই)