কানাডায় খলিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের মৃত্যুবার্ষীকিতে সম্প্রতি কানাডার সংসদে নীরবতা পালন করা হয়েছিল। আর সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার কড়া কথা শোনাল ভারত। এমনিতেই নিজ্জরের হত্যাকাণ্ড ইস্যুতে ভারত-কানাডার সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে বিগত কয়েক মাসে। এই আবহে সেই নিজ্জরের মৃত্যুবার্ষীকিতে কানাডার সংসদে নীরবতা পালনের বিষয়টি ভালো চোখে দেখেনি ভারত। এই আবহে ইতিমধ্যেই ১৯৮৫ সালে খলিস্তানি জঙ্গিদের দ্বারা সংগঠিত এয়ার ইন্ডিয়া বিস্ফোরণের স্মৃতি উস্কে দিয়েছে ভারত। সেই উড়ানটি কানাডা থেকেই উড়ে গিয়েছিল। ঘটনায় ৩২৯ জনের মৃত্যু ঘটেছিল। তাঁদের অধিকাংশ কানাডার নাগরিক ছিলেন। এই সবের মাঝেই আবার সপ্তাহান্তে ভ্যানকুবারে ভারত বিরোধী বিক্ষোভ প্রদর্শন করে খলিস্তানিরা। তা নিয়েও সরব হয়েছে দিল্লি। (আরও পড়ুন: ৪ দফার বকেয়া ডিএ মেটানোর দাবি কর্মীদের, অপরদিকে বেতন বাড়াতে কমিশন গঠন রাজ্যের)
নিজ্জর হত্যার প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার কানাডার হাউস অফ কমন্সে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়। এদিকে এক জঙ্গির মৃত্যুবার্ষীকিতে কানাডা সরকারের এই অবস্থান আরও 'সাহস' জুগিয়েছে খলিস্তানিদের। এই আবহে ভ্যানকুভারে ভারতীয় কনসুলেটের বাইরে 'গণ আদালত' বসিয়েছিল খলিস্তানিরা। এই আবহে এবার মুখ খুলল দিল্লি। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, 'রাজনীতিতে চরমপন্থাকে জায়গা দেওয়া উচিত নয়। স্বাভাবিকভাবেই আমরা হিংসার মদদদাতাদের যে কোনও পদক্ষেপের বিরোধিতা করি।' জয়সওয়াল বলেন, কানাডায় খালিস্তানি উপাদানগুলির কার্যকলাপ ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা বারবার কানাডা সরকারকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছি। আমরা বলেছি যে চরমপন্থী ভারতবিরোধীরা সহিংসতায় সমর্থন দেয়, তাদের রাজনৈতিক স্পেস দেওয়া হচ্ছে। তা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বরে কানাডার সংসদে দাঁড়িয়ে দাবি করেছিলেন, নিজ্জর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারতীয় এজেন্টজে যুক্ত থাকার 'বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ' রয়েছে। অবশ্য, নিজ্জর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারতের সরকারের যুক্ত থাকার অভিযোগ প্রথম থেকেই খারিজ করে এসেছে দিল্লি। কানাডা সরকার এখনও পর্যন্ত সেভাবে কোনও প্রমাণও দিতে পারেনি। সেই হত্যাকাণ্ডের বর্ষপূর্তিতে কানাডার সংসদে নীরবতা পালন করা হয়। প্রসঙ্গত, গতবছর গুরুদ্বারের ভেতরেই গুলি করে হত্যা করা হয় খলিস্তানপন্থী জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরকে। হরদীপকে ২০ বারেরও বেশি গুলি করা হয়েছিল।
রিপোর্ট অনুযায়ী, কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের পঞ্জাবি অধ্যুষিত সারে অঞ্চলে থাকত হরদীপ। বিগত কয়েকবছরে কানাডার ভ্যানকুবারে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে খলিস্তানি বিক্ষোভের নেপথ্যে ছিল এই হরদীপ। কানাডায় মৃত হরদীপের বিরুদ্ধে এনআইএ-র চারটি মামলা ছিল। এক হিন্দু পুরোহিতকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র সহ খলিস্তানি যোগের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। এই আবহে হরদীপ নিজ্জরের মাথার দাম ১০ লক্ষ টাকা ধার্য করেছিল এনআইএ। জানা যায়, হরদীপ খলিস্তান টাইগার ফোর্সের প্রধান ছিল। গুরপতবন্ত সিং পান্নুনের 'শিখস ফর জাস্টিস' সংগঠনের মতাদর্শ প্রচারের দায়িত্ব ছিল হরদীপের টাইগার ফোর্সের ওপর।