সীমান্তে চোখ রাঙাচ্ছে চিন। তারইমধ্যে ৩৩ টি নয়া যুদ্ধবিমান কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। একইসঙ্গে ডিফেন্স রিসার্চ অ্য়ান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) থেকে দূরপাল্লার এয়ার-টু-এয়ার অ্যাস্ট্রা ক্ষেপণাস্ত্র কেনারও ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের পৌরহিত্যে ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিলের (ডিএসি) বৈঠকের পর মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়, ১২ টি সুখোই-৩০এমকেআই এবং ২১ টি মিগ-২৯এস কেনার প্রস্তাবে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে মিগ-২৯এস যুদ্ধবিমানগুলি রাশিয়া থেকে কেনা হবে। সেজন্য খরচ ধরা হয়েছে ৭,৪১৮ কোটি টাকা। সুখোই যুদ্ধবিমানগুলি অবশ্য হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেডের (হ্যাল) কাছ থেকে কেনা হবে। সেজন্য ১০,৭৩০ কোটি টাকা খরচ পড়বে।
পাশাপাশি ভারতের হাতে থাকা ৫৯ টি মিগ-২৯এস যুদ্ধবিমানকে আরও আধুনিক করে তোলারও ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র। সবমিলিয়ে সেই খাতে ১৮,১৪৮ কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছে রাজনাথ সিংয়ের মন্ত্রক।
এমন দিনে এই অনুমোদন দেওয়া হল, যেদিন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সাফল্যের ৭৫ তম বার্ষিকীতে বিজয় দিবস পালনের জন্য পুতিনকে অভিনন্দন জানান। গণভোটে অধিকাংশ মানুষ সংবিধান সংশোধনের পক্ষে রায় দেওয়ায় শুভেচ্ছা জানান মোদী। পাশাপাশি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় একইসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে একমত হন দুই রাষ্ট্রনেতা।
রাশিয়ার পাশাপাশি দেশীয়ভাবে তৈরি সমরাস্ত্রের উপরও বাড়তি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এই প্রথম দেশে তৈরি দূরপাল্লার এয়ার-টু-এয়ার অ্যাস্ট্রা ক্ষেপণাস্ত্র কেনার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। ডিআরডিওয়ের থেকে ২৪৮ টি অ্যাস্ট্রা ক্ষেপণাস্ত্র কিনবে ভারতীয় বায়ুসেনা এবং নৌবাহিনী। পাশাপাশি ১,০০০ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে সক্ষম ‘ল্যান্ড অ্যাটাক ক্রুজ মিসাইল’-র নকশা এবং উৎপাদনেও ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ডিআরডিওয়ের তৈরি সেই ক্ষেপণাস্ত্র ভারতীয় নৌবাহিনীর পি৭৫১ প্রোজেক্ট এবং অন্যান্য যুদ্ধতরীতে ব্যবহৃত হবে।
নয়া প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনা এবং পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য সবমিলিয়ে ৩৮,৯০০ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। তার ফলে ভারতের সমরাস্ত্র ভাণ্ডার আরও শক্তিশালী এবং উন্নত হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, নয়া বা অতিরিক্ত মিসাইল সিস্টেম কেনার ফলে তিন বাহিনীর ভাণ্ডার আরও বাড়বে। পিনাকা মিসাইলের ফলে ইতিমধ্যে মোতায়েন রেজিমেন্টের শক্তি আরও বৃদ্ধি পাবে। ১,০০০ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে সক্ষম ‘ল্যান্ড অ্যাটাক ক্রুজ মিসাইল’-র ফলে নৌবাহিনী এবং বায়ুসেনার আক্রমণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। একইসঙ্গে অ্যাস্ট্রা অন্তর্ভুক্ত হলে বায়ুসেনা এবং নৌবাহিনীর ক্ষমতা বহুগুণে বাড়বে।