ভারতীয় সেনাবাহিনীর পদাতিক বাহিনীর অস্ত্র সম্ভারে যোগ হতে চলেছে আমেরিকায় তৈরি হ্যান্ড লঞ্চড দূর নিয়ন্ত্রিত বায়ুযান ‘র্যাভেন’ এবং ইজরায়েলে তৈরি স্পাইক ফায়ারফ্লাই। এ ছাড়া ৪০ কিমি দূরত্বে নিখুঁত লক্ষ্যভেদী আর্টিলারি শেলও হাতে আসছে পদাতিক বাহিনীর।
পদাতিক বাহিনীর শক্তিবৃদ্ধি করার পাশাপাশি, বায়ুসেনার অস্ত্রভাণ্ডারে যোগ হতে চলেছে ৫টি রাফায়েল মাল্টিরোল ফাইটার জেট। প্যারিস থেকে এই পাঁচ যুদ্ধবিমানের সঙ্গেই চলতি মাসের শেষে আম্বালার বায়ুসেনা ঘাঁটিতে এসে পৌঁছানোর কথা প্রশিক্ষণের জন্য আরও চারটি যুদ্ধবিমান।
এ বছরের শেষেই আবার নৌবাহিনীর দ্বিতীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল সমৃদ্ধপারমাণবিক সাবমেরিন আইএনএস আরিঘাট প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে।
প্রতিরক্ষা দফতর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, আমেরিকায় তৈরি ২০০টি RQ-11 UAV স্বয়ংচালিত বায়ুযানের বরাত দিতে চলেছে ভারতীয় সেনা। র্যাভেন নামে জনপ্রিয় এই যান ৫০০ ফিট উচ্চতায় ঘণ্টায় ৯৫ কিমি বেগে ১০ কিমি পর্যন্ত উড়তে সক্ষম। আকাশ থেকে শত্রুপক্ষের সেনা সমাগম-সহ যুদ্ধ পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে পারদর্শী র্যাভেন।
অন্য দিকে, লাদাখে চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতের পরে ইজরায়েল থেকে স্পাইক মার্ক ৩ অ্যান্টি ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল কেনার সিদ্ধান্ত নেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী। সেই সঙ্গে ইজরায়েল থেকেই ফায়ারফ্লাই অ্যামিউনিশনও কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা এক কিমি দূরত্বের মধ্যে থাকা শত্রু নিশানা ভেদ করতে সফল হবে। এই অস্ত্রের সুবিধা হল, নিশানাকে নিজেই খুঁজে নি তে সক্ষম। শুধু তাই নয়, লক্ষ্য পাল্লার বাইরে চলে গেলে অস্ত্রটি ফেরতও আনা যায়।
পূর্ব লাদাখে অনুপ্রবেশকারী চিনা বাহিনীকে নিয়ে যে সময় ভারতীয় সেনা ও বায়ুসেনা ব্যস্ত ছিল, ঠিক তখনই গুরুগ্রামের ফিউশন সেন্টার থেকে ভারত মহাসাগরে চিনা যুদ্ধজাহাজের গতিবিধির উপরে নজর রাখছিল নৌসেনা বিভাগ।
নৌসেনার তরফে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তা জানিয়েছেন, বালোচিস্তানের গ্বাদার বন্দরে ঘাঁটি গেড়ে থাকা চিনা যুদ্ধজাহাজগুলির মধ্যে প্রথম দফায় তিনটি চিনে ফিরে যায়। তাদের উপর গোটা যাত্রাপথে নজর রাখে ভারতীয় নৌসেনা। পরে বাকি তিনটি জাহাজও দেশে ফেরে।
বর্তমানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা সরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে ভারত ও চিন। সেনা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে বেশ কিছু শর্ত আরোপের চেষ্টায় ছিল বেজিং, কিন্তু ভারতীয় সেনার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ শর্তহীন হতে হবে। আপাতত এই নিয়ে দফায় দফায় বৈঠকে বসছেন দুই পক্ষের সামরিক ও কূটনৈতিক নেতারা।