ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ছোট’ দাবি মেনে নিয়ে ‘আসল’ কাজ করানোর পরিকল্পনা করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার? সম্প্রতি সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে যে দাবি করা হয়েছে, সেটার প্রেক্ষিতেই এমন মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, বিষয়টির সঙ্গে অবহিত আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে আমেরিকায় বেআইনিভাবে থাকা প্রায় ১৮,০০০ ভারতীয়কে চিহ্নিত করেছে মার্কিন প্রশাসন। তাঁদের সকলকে ট্রাম্প প্রশাসন ফেরত পাঠাবে। আর ভারত সরকার নথি যাচাই করে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়ার দেখভাল করবে বলে সূত্র উদ্ধৃত করে ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে।
এমনিতে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় জমানা শুরুর আগে থেকেই ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে এসেছেন যে বেআইনি অভিবাসীদের নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। সেই রেশ ধরেই বেআইনি ভারতীয় অভিবাসীদেরও ফেরানো হচ্ছে বলে ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই কাজে সাহায্য করবে ভারত সরকার।
ভারতীয়দের জন্য H-1B ভিসা গুরুত্বপূর্ণ
আর সেটা আদতে মোদী সরকারের কৌশল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। ওই মহলের মতে, বেআইনি ভারতীয় অভিবাসীদের ফিরিয়ে আদতে এইচ-ওয়ানবি ভিসা এবং পড়ুয়াদের ভিসার মতো বৈধ মাধ্যমে ভারতের দক্ষ কর্মী এবং পড়ুয়াদের আমেরিকায় যাওয়ার রাস্তা প্রশস্ত করতে চাইছে নয়াদিল্লি। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে আমেরিকা যে ৩,৮৬,০০টি এইচ-ওয়ানবি ভিসা দিয়েছিল, তার তিন-চতুর্থাংশই ভারতীয় ছিলেন।
তবে এখন এইচ-ওয়ানবি ভিসার ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি করতে চলেছেন ট্রাম্প। সেটার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে ভারতীয়দের উপরে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সেই আবহে বেআইনি ভারতীয় অভিবাসীদের ফেরত নিয়ে নয়াদিল্লি এই বার্তাটা দিতে চাইছে যে ট্রাম্প প্রশাসন যেমনটা চাইছিল, সেরকম করা হয়েছে। আর তাতে এক ঢিলে একাধিক পাখিও মারা যাবে।
‘আসল’ কাজটা কী?
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এইচ-ওয়ানবি ভিসা এবং পড়ুয়া ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে ভারতীয়দের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেই বার্তা দিতে পারবে নয়াদিল্লি। আর অহেতুক কোনও বাণিজ্য সংঘাতে জড়ানো হবে না। বেআইনি অভিবাসীদের ভারতে ফেরানোর থেকে ওই বিষয়গুলি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।
সহজ প্রতিজ্ঞা পূরণ করা উচিত ভারতের, মত বিশেষজ্ঞের
ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, লন্ডনের কিংস কলেজের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক হর্ষ পন্ত বলেছেন, 'যে ক্ষেত্রে প্রতিজ্ঞা পূরণ করা সহজ, সেখানে ভারতকে সেই কাজটা করতে হবে। বেআইনি অভিবাসনের ক্ষেত্রে ভারত ট্রাম্প প্রশাসনকে এই বার্তাটা দিতে পারবে যে তারা প্রতিজ্ঞা পূরণ করছে।' সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ব্যবসা বা শুল্কের মতো বিষয়গুলি জটিল। তাতে আলাদা ব্যাপারও আছে।
আরও পড়ুন: America: জন্মসূত্রে নাগরিকত্বে 'না', আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয়দের ওপর কী প্রভাব পড়বে?
যদিও সেইসব বিষয় নিয়ে আপাতত ভারত সরকারের তরফে সরকারিভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। সূত্র উদ্ধৃত করে ওই রিপোর্টে অবশ্য জানানো হয়েছে. ১৮,০০০-র থেকে আমেরিকায় বেআইনি অভিবাসীর সংখ্যা অনেক বেশি, যাঁদের কাছে মার্কিন মুলুকে থাকার কোনও বৈধ নথিপত্র নেই।