রাহুল সিং
ভারতীয় বায়ুসেনার স্পেশাল কমান্ডো ফোর্সে যোগ দিতে পারবেন মহিলা অফিসাররাও। এমনই জানিয়েছেন বিষয়টির সঙ্গে অবহিত আধিকারিকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, মাপকাঠি পূরণ করলে বায়ুসেনার স্পেশাল ইউনিট ফোর্সে (Garud commando force) যোগদানের ক্ষেত্রে মহিলাদের কোনও বাধা থাকবে না।
নাম গোপন রাখার শর্ত বিষয়টির সঙ্গে অবহিত এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গত বছরই স্পেশাল ইউনিট ফোর্সে মহিলাদের সুযোগ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে বিষয়টি এখন সামনে এসেছে। যে স্পেশাল ইউনিট ভারতীয় বায়ুসেনার অন্যতম সেরা ইউনিট। ওই ‘এলিট’ বাহিনীতে যোগদানের ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য কোনও মাপকাঠি শিথিল করা হবে না। সম্পূর্ণ মাপকাঠি পূরণ করলে তবেই ওই বাহিনীতে সুযোগ মিলবে।
এমনিতে ভারতীয় সেনা, ভারতীয় বায়ুসেনা ও ভারতীয় নৌসেনার স্পেশাল ফোর্সের আধিকারিকরা দেশের সেরা জওয়ান হন। মারাত্মক কঠিন প্রশিক্ষণের পরে তাঁদের কাঁধে স্পেশাল ফোর্সের ব্যাজ জ্বলজ্বল করে। মানসিক, শারীরিক দিক থেকে তাঁদের চূড়ান্ত পর্যায়ে যেতে হয়। এতটাই কঠোর প্রশিক্ষণ হয়, যা স্রেফ একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে চিন্তা করাই দুষ্কর হয়ে ওঠে। জওয়ানদের সরাসরি স্পেশাল ফোর্স নিয়োগও করা হয় না। চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর স্বেচ্ছায় জওয়ানরা স্পেশাল ফোর্সের প্রশিক্ষণ বেছে নিতে পারেন। তাতে পাশ করলে তবেই ভারতীয় সুরক্ষা বাহিনীর এলিট স্পেশাল ফোর্সের সদস্য হওয়া যায়।
ভারতীয় বায়ুসেনার Garud কমান্ডো ফোর্সের ক্ষেত্রেও সেই বিষয়টি প্রয়োজ্য। ২০০৪ সালে ফোর্স তৈরি করেছে বায়ুসেনা। তিন বছর আগে অবন্তীপুরার একটি ঘটনার পরেই বায়ুসেনা স্পেশাল ফোর্স তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই ঘটনায় দিনের বেলায় জম্মু ও কাশ্মীরের অবন্তীপুরায় বায়ুসেনায় ছাউনিতে ঢোকার চেষ্টা করেছিল চার সশস্ত্র জঙ্গি। ওই জঙ্গিদের কাছে কালাশনিকভ ও গ্রেনেড ছিল। চারজনকেই খতম করে দেওয়া হয়েছিল। তবে ওই ঘটনার পর বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করে ভারতীয় বায়ুসেনা। পরবর্তীতে জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে সামিল থেকেছেন Garud কমান্ডো ফোর্সের কমান্ডাররা। খতম করেছেন জঙ্গিদের।
তবে লিঙ্গ সাম্যের পথে এটাই প্রথম ধাপ নয় ভারতীয় বায়ুসেনার। অতীতে শারীরিক, মানসিক, সাংস্কৃতিক কারণে সামরিক ভূমিকা থেকে মহিলাদের দূরে রাখা হত। কিন্তু ২০১৫ সালে ভারতের সামরিক ইতিহাসে এক নয়া অধ্যায় রচিত হয়। সেই বছর মহিলা পাইলটদেরও যুদ্ধবিমান চালানো অনুমোদন দেয় ভারতীয় বায়ুসেনা।