ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন রাজনীতিবিদ ক্ষমা সাওয়ান্ত দাবি করেছেন, তিন তিনবার তাঁর ভারতের ভিসা আবেদন নাকচ করে দেওয় হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সিয়াটেল সিটি কাউন্সিলের সদস্য থাকা এই বামপন্থী নেত্রীর মা ভারতে থাকেন। ক্ষমার মা অসুস্থ। এই আবহে তিনি ভারতে আসতে ভিসার আবেদন করতে ভারতীয় কনস্যুলেটে গিয়েছিলেন। তবে তাঁকে ভিসা দেওয়া হয়নি। অবশ্য ক্ষমা জানিয়েছেন, তাঁর মাকে দেখতে যাওয়ার জন্যে তাঁর স্বামীকে জরুরি ভিসা মঞ্জুর করা হয়েছে। এদিকে ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় কনস্যুলেটেই প্রতিবাদ দেখাতে শুরু করেছিলেন ক্ষমা। এই আবহে ভারতীয় কনস্যুলেটের তরফ থেকে পালটা অভিযোগ করা হয়েছে, ক্ষমা বিনা অনুমতিতে সেখানে অনুপ্রবেশ করেছিলেন। (আরও পড়ুন: 'শেখ হাসিনার পরিবারের সম্পত্তি ধ্বংস করবেন না', বাংলাদেশিদের বার্তা ইউনুসের)
এই নিয়ে সিয়াটেলে অবস্থিত ভারতীয় কনস্যুলেটের তরফ থেকে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করা হয়। তাতে ক্ষমা সাওয়ান্তের নাম না নিয়েই লেখা হয়েছে, 'আজ, কনস্যুলেট অফিস সময়ের পরে কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে কিছু ব্যক্তির অননুমোদিত প্রবেশের ফলে উদ্ভূত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে বাধ্য হয়েছি আমরা। বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও, এই ব্যক্তিরা কনস্যুলেট প্রাঙ্গন ত্যাগ করতে অস্বীকার করে এবং কনস্যুলেট কর্মীদের সাথে আক্রমনাত্মক ও হুমকিমূলক আচরণে লিপ্ত হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে আমরা সংশ্লিষ্ট স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে ফোন করতে বাধ্য হই। অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।'
এদিকে ঘটনা প্রসঙ্গে ক্ষমা সাওয়ান্ত নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখেন, 'আমি এবং আমার স্বামী সিয়াটলের ভারতীয় কনস্যুলেটে আছি। আমার মা খুব অসুস্থ। তাঁকে দেখতে যাওয়ার জন্যে আমার স্বামীকে তাঁরা জরুরি ভিসা দিয়েছে। কিন্তু আক্ষরিক অর্থেই আমার নাম 'রিজেক্ট লিস্টে' আছে বলে আমার ভিসার আবেদন তাঁরা প্রত্যাখ্যান করেছেন। এবং কেন এটা করা হয়েছে, তার কোনও ব্যাখ্যা দিতেও অস্বীকার করছেন কনস্যুলেট সদস্যরা। আমরা এখান থেকে যেতে রাজি নই। তাঁরা আমাদের পুলিশ ডাকার হুমকি দিচ্ছেন।'
উল্লেখ্য, ২০১৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সিয়াটল সিটি কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ক্ষমা সাওয়ান্ত। নিজের এক্স-এর 'বায়ো'-তে তিনি নিজেকে মার্ক্সবাদী বলে উল্লেখ করেছেন। ক্ষমা সাওয়ান্ত জানান, ভিসা না পাওয়ায় তিনি এবং ওয়ার্কার্স স্ট্রাইক ব্যাক নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা ভারতীয় কনস্যুলেটে 'শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ' প্রদর্শন করতে চান। প্রসঙ্গত, পুনেতে জন্মগ্রহণকারী সাওয়ান্ত একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের মেয়ে। ক্ষমা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সোশ্যালিস্ট অল্টারনেটিভের সদস্য। তিনি সিয়াটলে ন্যূনতম মজুরি ঘণ্টায় ১৫ ডলারে উন্নীত করতে সহায়তা করেছেন। ক্ষমার কথায়, তিনি অল্প বয়সেই তিনি সমাজতান্ত্রিক হয়ে ওঠেন। উল্লেখ্য, ক্ষমা ভারতের মোদী সরকারের সমালোচক। তিনি এর আগে সিএএ এবং এনআরসি-র বিরোধিতা করেছিলেন বলে দাবি করা হয়।