গত আট মাস যাবৎ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (LAC) সংলগ্ন অঞ্চলে চিনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধের আবহে বুধবার প্যাংগং সরোবরের দক্ষিণ তীর-সহ পূর্ব লাদাখের বেশ কিছু অঞ্চল ঘুরে দেখলেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল এমএম নারাভানে।
এ দিন সকাল ৮.৩০-এ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় সেনা অবস্থানে পৌঁছন জেনারেল নারাভানে। তিনি ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কর্পস’ নামে জনপ্রিয় সেনাবাহিনীর ১৪ কর্পস এবং উধমপুরের নর্দার্ন কম্যান্ড বাহিনীর অংশবিশেষের প্রস্তুতি পরিদর্শন করেন।
এ দিন সেনাপ্রধানের সফর তালিকায় ছিল প্যাংগং সরোবরের দক্ষিণ তীরবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত রেচিন লা গিরিপথ, যেখানে গত ২৯-৩০ অগস্ট চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির সঙ্গে সংঘাতের পরে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করে ভারতীয় সেনা। গিরিপথ এলাকায় তীব্র শীতের মোকাবিলায় সেনা সদস্যদের বাসস্থানও তিনি ঘুরে দেখে সেনা সদস্যদের সহিষ্ণুতার প্রশংসা করেন।
এ দিন লাদাখের সীমান্ত সংলগ্ন গুরুত্বপূর্ণ সামরিক বিমানঘাঁটিতে পৌঁছলে সেনাপ্রধানকে স্বাগত জানান লেহতে বহাল ১৪ কর্পস-এর কম্যান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল পি জি কে মেনন। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারতীয় সেনার প্রস্তুতি সম্পর্কে সেনাপ্রধানকে অবগত করেন উপস্থিত সামরিক আধিকারিকরা।
তিনি সেনাবাহিনীর ঘাঁটি ফরোওয়ার্ড বেস তারা-ও পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় কম্যান্ডার ও জওয়ানদের সঙ্গে আলোচনার পরে তাঁদের অটুট মনোবল ও প্রস্তুতির তারিফ করেন।
বুধবারের সফরে লাদাখে মোতায়েন সেনাবাহিনীর সদস্যদের ক্রিসমাসের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে কেক ও মিষ্টি বিতরণ করেন জেনারেন নারাভানে। সন্ধ্যায় তিনি নয়া দিল্লি ফিরে আসেন।
সীমান্ত সংঘাতের সমাধান খুঁজতে প্রায় দুই মাস পরে গত ১৮ ডিসেম্বর কূটনৈতিক বৈঠকে অংশগ্রহণ ভারত ও চিন। তবে আলোচনায় এখনও কোনও সমাধানসূত্র পাওয়া যায়নি।
চিনা ফৌজের মোকাবিলায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন পূর্ব লাদাখের দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে প্রায় ৫০,০০০ সেনা মোতায়েন করেছে ভারত। তীব্র শীতে শূন্যের অনেক নীচে নেমে যাওয়া তাপমাত্রা থেকে রক্ষা পেতে বর্তমানে মাটির নীচের সামরিক ঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছেন ভারতীয় সেনা সদস্যরা। অন্য দিকে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সমসংখ্যক সেনা সমাবেশের আয়োজন করেছে চিনও।