ভারতীয় সেনায় আমূল পরিবর্তন আসতে চলেছে। সোভিয়েত জমানার অস্ত্রের বদলে সেনার হাতে আসবে ভারতে তৈরি অস্ত্র। দেশের পদাতিক সেনায় যান্ত্রিক সরঞ্জামের সংযুক্তিকরণ ঘটবে বলে রবিবার জানিয়ে দিল ভারতীয় সেনা। সেনাকে ভবিষ্যতমুখী বানাতেই এই পদক্ষেপ করা হবে। যানবাহন, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এবং রাত্রিকালীন যুদ্ধের গিয়ার থেকে শুরু করে অ্যান্টি-ড্রোন ব্যবস্থায় এই নয়া সংযুক্তিকরণ ঘটবে। দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করেই সেনাকে আধুনিকতার পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। গোয়েন্দাগিরি থেকে নজরদারির ক্ষেত্রে এই আধুনিকীকরণ খুব কার্যকরী হবে বলে আশা সেনার। দ্রুত গতিতেই এই নয়া যান্ত্রিক ব্যবস্থায় সাজিয়ে ফেলা হবে সেনাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক হিন্দুস্তান টাইমসকে জানান, আধুনিকীকরণের জন্য যে রোডম্যাপ তৈরি হচ্ছে তার মাধ্যমে সেনাকে আরও ঘাতক এবং চটপটে করতে চাইছে হাইকমান্ড। যুদ্ধের আবহে সেনা যাতে দ্রুত এবং কার্যকর ভাবে কাজ করতে পারে এর জন্যই পুরো ঢেলে সাজানো হচ্ছে বাহিনীকে।
বর্তমানে ভারতের মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রি ইউনিটের কাছে সোভিয়েত জমানার বিএমপি-২ রয়েছে। পূর্ব লাদাখে চিনা বাহিনীকে রুখতে এই বিএমপি-২ বেশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছিল। এই আবহে আরও উন্নত প্রযুক্তি সেনার হাতে তুলে দিতে ভারতীয় প্রযুক্তির ওপরই ভরসা রাখা হবে বলে জানা গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের আওতায় বিএমপি-২ যানগুলির বদলে ফেলা হবে। ভারতে তৈরি ৪৮০টি অত্যাধুনিক ‘ইনফ্যান্ট্রি কমব্যাট ভেহিকেল’ সেনার হাতে তুলে দেওয়া হবে। এর জন্য সেনার তরফে সামরিক অধিগ্রহণ কাউন্সিলের কাছে অনুমতি চাওয়া হবে। জানা গিয়েছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আধুনীকরণের জন্য ইতিমধ্যেই অনুমোদন চলে এসেছে। প্রসঙ্গত, প্রচিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বাধীন সামরিক অধিগ্রহণ কাউন্সিলের মাধ্যমেই সেনা সামরিক সরঞ্জাম এবং অস্ত্র কেনার অনুমোদন পেয়ে থাকে।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ন্যাগ মিসাইল সিস্টেম (১৩টি ন্যাগ মিসাইল ক্যারিয়ার এবং ২৯৩টি মিসাইল), ১৭৭টি ইনফ্যান্ট্রি কমব্যাট ভেহিকেল, ১০৫টি সামরিক সাঁজোয়া যান সেনায় যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর মাধ্যমে সোভিয়েত জমানার সাঁজোয়া যান এবং অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইলকে বদলে ফেলবে সেনা। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে তা চিনের বিরুদ্ধে ভারতের প্রতিরক্ষা আরও পোক্ত হবে বলে মত প্রকাশ করেন পশ্চিমী সেনা কমান্ডের অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আরপি সিং।