নতুন করে ভারতের ইতিহাস লেখার উদ্যোগ নিল ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিকাল রিসার্চ’। সংস্কৃত বা ভারতীয় ভাষার ঐতিহাসিক গ্রন্থগুলির তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই ইতিহাস নতুন করে লেখা হবে বলে জানা গিয়েছে। ভারতীয় ইতিহাস থেকে ‘ইউরোপীয় দৃষ্টিভঙ্গি’ মুছতেই এই পদক্ষেপ করা হবে। ‘ভুল’ শুধরে ‘বাদ পড়া’ অংশগুলি জুড়ে দেওয়া হবে ভারতের ইতিহাসে।
‘কম্প্রিহেন্সিভ হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়া’ নামক এক প্রোজেক্টের মাধ্যমে নতুন করে ভারতের ইতিহাস জনসমক্ষে আনা হবে। ১২ থেকে ১৪ ভলিউমের এই ‘ইতিহাসের বই’ লিখতে ৩ থেকে ৪ বছর সময় লাগবে বলে জানা গিয়েছে। কাউন্সিলের সচিব উমেশ কদম জানিয়েছেন, এই প্রোজেক্টের প্রথম ভলিউম প্রকাশ করা হতে পারে ২০২৩ সালের মার্চ মাসেই। উমেশ কদম জানান, দেশজুড়ে ১০০ জন ইতিহাসবিদ এই প্রোজেক্টে কাজ করবেন। তাঁর কথায়, এই প্রোজেক্ট ভূরাজনৈতিক আঙ্গিক থেকে নয়, বরং ভূসাংস্কৃতিক আঙ্গিকে লেখা হবে।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের অধীনে স্বাধীন একটি সংস্থা হল ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিকাল রিসার্চ’। উমেশ কদম বলেন, ‘এই প্রোজেক্টের মূল ধারণাটি হল, ভারত জুড়ে সমস্ত রাজবংশকে সমান প্রতিনিধিত্ব দিয়ে আঞ্চলিক উৎস থেকে তথ্য ব্যবহার করে ইতিহাসকে পুনর্লেখন। এখনও পর্যন্ত যেসব তথ্য হয়ত বাদ পড়েছে বা উদ্দেশ্যমূলকভাবে সেগুলিকে বাদ রাখা হয়েছে, এমন সব বিষয়গুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে ইতিহাসে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঔপনিবেশিক কাল থেকে ভারতীয়দের মনে বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়েছিল। আমরা সেই সব বিষয়কে বদলে ফেলার জন্য চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করছি।’
কাউন্সিলের সচিবের অভিযোগ, বর্তমান অসমের আহোম রাজবংশ, দেবগিরির যাদব রাজবংশ, রাষ্ট্রকূট রাজবংশ এবং কদম্ব রাজবংশের মতো গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ভারতের ইতিহাসে প্রাধান্য পায়নি এতকাল। তাঁর প্রশ্ন, ‘অহোম রাজবংশ ৬০০ বছর ধরে রাজত্ব চালিয়েছে। কিন্তু মুঘলরা মাত্র ১৮০ বছরের মতো ক্ষমতার শিখরে ছিল। তাহলে কেন এই অবহেলা?’ তিনি বলেন, ‘ভারতীয় ইতিহাসে মারাঠাদেরও যোগ্য সম্মান দেওয়া হয়নি। আমাদের পড়ানো হয়েছে, ১৭ এবং ১৮ শতকে মুঘলদের পতনের সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটিশদের উত্থান হয়। যদিও এই সময়কালে মারাঠাদের উত্থান হয়েছিল দেশে।’