রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় সবে শুরু হচ্ছিল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ভাষণ। প্রত্যাশিত ছিল, কোন বিষয়ে ভাষণের বেশিরভাগ সময় ব্যয় করবেন। সেই ভাষণ শুরুর আগেই প্রতিবাদ স্বরূপ সাধারণ পরিষদের সভাকক্ষ ত্যাগ করলেন রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মিজিতো ভিনিতো।
আগেভাগেই রেকর্ড করে রাখা সেই ভাষণে যথারীতি কাশ্মীর ইস্যুতে নাক গলান ইমরান। জম্মু ও কাশ্মীরের আইনসভার পরিবর্তন, সেখানে ভারতীয় বাহিনীর উপস্থিতি, সংখ্যালঘুদের প্রতি ব্যবহারের মতো বিষয় নিয়ে যথারীতি মুখ খুলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, কাশ্মীর একটি পারমাণবিক দ্বন্দ্বের জায়গায় পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক নিয়মের ভিত্তিতে কাশ্মীর ইস্যু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি থাকবে না বলে মন্তব্য করেন ইমরান।
প্রত্যুত্তরে ভারতের তরফে আবারও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, ভারতের অখণ্ড অংশ হল জম্মু ও কাশ্মীর এবং ভবিষ্যতেও তা থাকবে। নয়া কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সংক্রান্ত যে কোনও বিষয় একান্তভাবেই ভারতের অভ্যন্তরীণ বলে নয়াদিল্লির তরফে সাফ জানানো হয়। তবে সেখানেই শেষ হয়নি, ভারতের তরফে খোঁচা দিয়ে জানানো হয়, ইমরানের ‘কোনও কৃতিত্ব নেই’। তাঁর ভাঁড়ার শূন্য।
ভারতের উত্তর দেওয়ার অধিকার প্রয়োগ করে রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি বলেন, '৭৫ তম বর্ষপূর্তিতে নয়া নিকৃষ্টের সাক্ষী থাকল এই মহান ফোরাম। যারা ঘৃণা ও হিংসায় প্ররোচনা দেয়, তাদের জন্য গলা ফাটিয়েছেন পাকিস্তানের নেতা। কিন্তু যখন নিজের ভাষণ চালিয়ে গেলেন, তখন আমরা ভাবতে বাধ্য হচ্ছিলাম, উনি কি নিজের কথাই বলছেন? এই কক্ষকে এমন একজনের লাগাতার ভুলভাল ভাষণ শুনতে হল, যাঁর নিজের স্বপক্ষে কিছু দেখানোর নেই, বড়াই করার মতো কোনও কৃতিত্ব নেই এবং বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য কোনও যুক্তিসঙ্গত পরামর্শ নেই। পরিবর্তে এই সভার মাধ্যমে মিথ্যা, ভুয়ো তথ্য, অন্য দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্ররোচনা এবং কুৎসা ছড়িয়ে পড়তে দেখলাম আমরা।'
সেখানেই অবশ্য থামেননি তরুণ কূটনীতিবিদ। আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের স্বরূপ প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'গত ৭০ বছরে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য এই দেশের একমাত্র গৌরব হল সন্ত্রাসবাদ, জনজাতির নির্মূলীকরণ, মৌলবাদের বাড়বাড়ত্ব এবং গোপনে পারমাণবিক বাণিজ্য।'