পূর্ব লাদাখে এপ্রিল থেকে চিনের সঙ্গে যে সীমান্ত উত্তেজনা চলছে, সেই নিয়ে বাদল অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে লোকসভায় বক্তব্য রাখলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি জানালেন সমস্ত পূর্ব চুক্তি, বোঝাপড়া ভঙ্গ করছে চিন। একই সঙ্গে তিনি জানান যে গালওয়ান সংঘর্ষে বিপুল সংখ্যক চিনা বাহিনীর মৃত্যু হয় ভারতীয় সেনা হাতে।
এদিন মূলত সমস্যা কোথায় ও গত কয়েক মাসে কী কী হয়েছে, সেটা বিস্তারিত ভাবে সংসদে বিবৃতি দেন রাজনাথ সিং। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা ঠিক ভাবে চিহ্নিত নয়, কারণ অনেক জায়গার ওপর দাবি আছে উভয় চিন ও ভারতের। এই সমস্যা নিরসনে প্রাথমিক ভাবে আগ্রহ প্রকাশ করলেও পরে তেমন কিছু করেনি চিন, বলে অভিযোগ করেন রাজনাথ।
তিনি জানান যেখানে এলএসি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিতর্ক আছে, সেখানে শান্তি কী ভাবে বজায় রাখতে হবে, সেই নিয়ে একাধিক বোঝাপড়া হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। কিন্তু ঐতিহাসিক ভাবে যেটা সীমান্ত হিসাবে চিহ্নিত, সেটা মানে না চিন। সীমান্ত পরিস্থিতির ওপর যে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নির্ভরশীল, সেটাও স্পষ্ট করে দেন তিনি।
রাজনাথ বলেন পূর্ব লাদাখে এপ্রিল থেকেই চিন লোকবল ও অস্ত্রশস্ত্র বৃদ্ধি করতে থাকে। যেভাবে তারা আক্রমণাত্মক আচরণ করেছে, তা সমস্ত চুক্তি ও বোঝাপড়ার পরিপন্থী বলে তিনি জানান।
গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পরিপ্রক্ষিতে রাজনাথ বলেন যে ভারতীয় সেনারা চিনকে যোগ্য জবাব দিয়েছিল। বিপুল সংখ্যক লাল ফৌজের সদস্যদের প্রাণহানি হয়েছিল সেই সংঘর্ষে বলে জানান তিনি। প্রসঙ্গত, কম্যান্ডিং অফিসার সহ ভারতের কুডি জন জওয়ান গালওয়ানে মারা যান। চিনের কত সেনা নিহত হয়েছে, সেই হিসেব দেয়নি পিএলএ। কিন্তু সংখ্যাটি যে যথেষ্ট বেশি, এদিন তা স্পষ্ট করে দিলেন রাজনাথ সিং।
যখন দুই পক্ষের মধ্যে ফেরত আলোচনা চলছে, তখন ফের চিন আগ্রাসন দেখিয়েছে বলে অভিযোগ করেন রাজনাথ। তিনি সাংসদদের আশ্বস্ত করেন যে চিনের আগ্রাসন খুব দক্ষ ভাবে আটকেছে ভারত।
সেনাবাহিনী যে দেশের নিরাপত্তা ও অখণ্ডতা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর, সেই আশ্বাস দেন রাজনাথ সিং। তিনি জানান যে ভারত চায় শান্তিপূর্ণ ভাবে এই সমস্যা মিটে যাক, কিন্তু কোনও ভাবেই লাল ফৌজের আগ্রাসনকে মেনে নেওয়া হবে না।