কানাডায় হিন্দু মন্দিরে খলিস্তানিদের হামলার ঘটনায় এবার কড়া প্রতিক্রিয়া দিল ভারত। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে জাস্টিন ট্রুডো সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরল ভারতীয় হাইকমিশন। এই নিয়ে এক বিবৃতি প্রকাশ করে ভারতীয় হাইকমিশনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, 'টরন্টোর কাছে ব্রাম্পটনে হিন্দু সভা মন্দিরের সাথে মিলে কনস্যুলার ক্যাম্পের আয়োজন করেছিল ভারতীয় হাইকমিশন। সেখানে আজ ভারত বিরোধীরা এসে হিংসাত্মক হামলা চালায়।' (আরও পড়ুন: 'লাল রেখা পার...', কানাডার মন্দিরে খলিস্তানি হামলায় সরব ট্রুডোর দলেরই সাংসদ)
আরও পড়ুন: তাঁর 'খলিস্তান প্রেম' নিয়ে চর্চার মাঝে কানাডার ৩ হিন্দু মন্দিরে জাস্টিন ট্রুডো
হাইকমিশনারের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, 'রুটিন কনস্যুলার কাজে এই ধরনের ব্যাঘাত ঘটতে দেখে আমরা খুবই হতাশ। এদিকে ভারতীয় নাগরিক এবং স্থানীয় যে ব্যক্তিরা এই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের আবেদন জানান, তাঁদের নিরাপত্তার জন্যও খুব উদ্বিগ্ন আমরা। এদিকে ভারতবিরোধীদের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আমাদের কনস্যুলেট ১০০০ জনেরও বেশি ভারতীয় এবং কানাডিয়ান আবেদনকারীদের জীবন শংসাপত্র ইস্যু করতে সক্ষম হয়েছিল।' (আরও পড়ুন: 'তলে তলে চুক্তি... হাসিনাকে আশ্রয় কেন?', অনুপ্রবেশ ইস্যুতে শাহকে তোপ হেমন্তের)
কী ঘটেছিল কানাডার মন্দিরে?
উল্লেখ্য, গতকাল অভিযোগ ওঠে, কানাডার অন্টারিওর ব্র্যাম্পটন (গ্রেটার অন্টারিও এলাকা) হিন্দু মন্দিরে ঢুকে আসে খলিস্তানিরা। সেখানে দর্শনার্থীদের ওপর নাকি হামলা চালায় তারা। কানাডার সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল টেলিগ্রাফ সাংবাদিক ড্যানিয়েল ব্রডম্যান সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) পোস্ট করেছেন, তাতে দেখা গিয়েছে যে হাতে খলিস্তানি পতাকা নিয়ে কয়েকজন একটা জায়গার মধ্যে ঢুকে এসে মারধর করছে। লাঠি নিয়ে ছুটে এসে আরও কয়েকজন হামলা চালাচ্ছে। তারইমধ্যে এক মহিলাকে চিৎকার করতে শোনা যায়। যে মন্দিরে খলিস্তানিপন্থী লোকজন হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, যেখানে ৫৫ ফুট উঁচু হনুমান মূর্তি আছে। উল্লেখ্য, এমনিতেই ব্র্যাম্পটনে খলিস্তানিপন্থীদের দাপট আছে। আর এই মন্দিরে হনুমানজির প্রতিমা স্থাপনের বিরোধিতা করা হয়েছিল এর আগে। (আরও পড়ুন: 'সেনা প্রত্যাহার তো একটা অংশ মাত্র...', ভারত-চিন সম্পর্ক নিয়ে বড় আপডেট জয়শংকরের)
ভারত-কানাডা কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব
এদিকে কানাডা নিবাসী খলিস্তানি জঙ্গি নিজ্জর হত্যা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কানাডায় নিযুক্ত প্রাক্তন হাইকমিশনার সঞ্জয় বর্মা-সহ কয়েকজন ভারতীয় কূটনীতিবিদকে একটি মামলার তদন্তে ‘পারসন অফ ইন্টারেস্ট’ করা হয়েছিল সম্প্রতি। এমনকী তাঁদের জেরা করতে চাওয়া হয়েছিল বলেও দাবি করা হয়েছে একাধিক রিপোর্টে। সূত্রের খবর, খলিস্তানি জঙ্গি নিজ্জরের মামলায় সঞ্জয় ভার্মাদের কাছে কোনও তথ্য থাকতে পারে বলে দাবি করেছিল কানাডা। আর এরপরই কানাডা সরকারের সেই পদক্ষেপে তুমুল ক্ষোভপ্রকাশ করে নয়াদিল্লি। প্রাথমিকভাবে কড়া বার্তা দেওয়া হয়। তলব করা হয় ভারতে কানাডার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার স্টুয়ার্ট রস উইলারকে। এরপর কানাডা থেকে ভারতীয় হাইকমিশনার-সহ বেশ কয়েকজন কূটনীতিবিদকে ফিরিয়ে আনার ঘোষণা করা হয়। আর তারপর ভারতে কানাডার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার-সহ ছয় কূটনীতিবিদকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছিল।