আমেরিকা থেকে অবৈধবাসী ভারতীয়দের নিয়ে এখনও পর্যন্ত ৩টি বিমান অবতরণ করেছে অমৃতসরে। তার মধ্যে দ্বিতীয় বিমানে ছিলেন ৬৫ জন পঞ্জাবের বাসিন্দা। তারও মধ্যে আবার সর্বোচ্চ সংখ্যক অবৈধবাসী ছিলেন গুরুদাসপুর এলাকার। আমেরিকা থেকে নিজের বাড়ি গুরুদাসপুরে ফিরে গিয়ে নিজেদের বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতার কথা জানালেন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে ফিরে আসা দুই ভাই। গুরুদাসপুরের খানোয়াল বোহরি গ্রামে নিজের বাড়িতে বসে হরজিৎ সিং বলেন, 'বিমানে আমাদের পা চেন দিয়ে বাঁধা ছিল। হাতে ছিল হাতকড়া।' তাঁর তুঁতো ভাই হরজ্যোৎ সিংও একই বিমানে ফিরেছেন ভারতে। হরজিৎ জানান, তাঁরা দুই ভাই ৪৫ লাখ টাকা করে দিয়েছিলেন দালালকে। (আরও পড়ুন: 'মার্কিন স্বপ্ন' পূরণ করতে পঞ্জাবে ফেরত আসা ৬৫ অবৈধবাসী খরচ করেছিলেন ২৭.৫ কোটি)
আরও পড়ুন: 'স্টেশনে ব্যবস্থা আরও টাইট থাকা উচিত ছিল', পদপিষ্টকাণ্ডে বার্তা শুভেন্দুর
রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশে ফিরে আসা হরজ্যোৎ মানসিক ভাবে গভীর আঘাত পেয়েছেন। তিনি কারও সঙ্গে কথা বলতে পারছেন না। তবে হরজিৎ নিজেদের বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতার কথা জানান। তিনি দাবি করেন, আমেরিকায় যাওয়ার জন্যে পানামার জঙ্গলের পথে নেওয়া হয়েছিল তাঁদের। সেখানে নাকি বন্দুকের নলের সামনে দাঁড় করিয়ে মাফিয়ারা মারধর করেছিল তাঁদের। (আরও পড়ুন: ইউনুসের বাংলাদেশে 'বিপ্লবীরা' নারীবিদ্বেষী? বিস্ফোরক 'হাসিনা বিরোধী' ছাত্রীরাই)
আরও পড়ুন: 'জামাতের অফিসে পাক রাষ্ট্রদূত', ভারতে আসা আওয়ামি নেতাদের না ধরার আবেদন শুভেন্দুর
হরজিৎ বলেন, 'আমরা আমেরিকা যেতে আমাদের ৩ একর কৃষি জমি, বাড়ির প্লট, গাড়ি বিক্রি করেছিলাম। এছাড়াও ঋণ নিয়েছিলাম আমরা। দুই ভাইয়ে মিলে ৯০ লাখ টাকা দিয়েছিলাম এজেন্টকে। সেই এজেন্ট আমাদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে পানাার বিপজ্জনক রাস্তা দিয়ে সে আমাদের আমেরিকায় নিয়ে যাবে না। আমরা ২০২৪ সালের ১৩ অক্টোবর যাত্রা শুরু করি। ২৭ জানুয়ারি আমরা আমেরিকার সীমানা পার করেছিলাম। আমরা আগে ভারত থেকে বিমানে করে গায়ানা গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ডাঙ্কি রুটে আমেরিকা যাই আমরা। পানামার জঙ্গলে বহুদিন কেটেছিল আমাদের। আমেরিকাতে ডিটেনশন ক্যাম্পে আমাকে মারধর করা হয়েছিল।' (আরও পড়ুন: সীমান্তে কাঁটাতার জট কাটবে? বাংলাদেশি উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জয়শংকর)
আরও পড়ুন: 'প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে', যৌথ অর্থনীতি গড়ে তুলতে ভারতের হাত ধরার বড় বার্তা ইউনুস
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয়বারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে ফেরার পর থেকেই 'অবৈধ অভিবাসন' এবং অনুপ্রবেশের মতো ইস্যু নিয়ে রণংদেহী মূর্তি ধারণ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই আবহে ক'দিন আগেই কলম্বিয়া সহ বেশ কিছু দেশে 'অবৈধ অভিবাসীদের' ফিরিয়ে দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। এদিকে অবৈধ অভিবাসীদের সামরিক বিমানে করে ফেরত পাঠানোর বেশ কিছু ছবি সম্প্রতি প্রকাশ করেছিল হোয়াইট হাউজ। তাতে দেখা গিয়েছিল, মানুষকে সারিবদ্ধ করে বিমানে তোলা হচ্ছে। তাঁদের সকলের কোমরে বাঁধা রয়েছে চেন। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। এই নিয়ে ভারতে ব্যাপক হৈচৈয়ের পর নয়াদিল্লি নির্বাসিতদের সঙ্গে আচরণের বিষয়ে ওয়াশিংটনকে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিল। এদিকে সম্প্রতি মার্কিন সফরে গিয়ে ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে মোদী বলেছিলেন, 'যারা অন্য দেশে অবৈধভাবে বসবাস করছে তাদের সেখানে থাকার অধিকার নেই। ভারত ও আমেরিকার ক্ষেত্রে আমরা আগেও বলেছি যে, যারা সত্যিই ভারতীয় এবং আমেরিকায় অবৈধভাবে থাকছেন, তাদের ফিরিয়ে নিতে ভারত তৈরি।'