করোনাভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসায় অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ রেমডেসিভার নিয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষার তৃতীয় পর্যায়ে গবেষক দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত চিকিৎসক অরুণা সুব্রমণিয়ন। এই তথ্য জানিয়েছেন ওষুধ প্রস্তুতকারক আমেরিকান সংস্থা জিলিড সায়েন্সেস।
পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ১০ দিনের রেমডেসিভার কোর্স সম্পূর্ণ করার পরে করোনা আক্রান্ত রোগীর বেশ কিছু শারীরিক উন্নতি ঘটছে। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ মেডিসিন-এর অধীনস্থ ইমিউনোকম্প্রোভাইজড হোস্ট এনফেকশাস ডিজিজ দফতরের প্রধান অধ্যাপক অরুণা সুব্রমণিয়ন।
তিনি জানিয়েছেন, এর আগে যে সমস্ত রোগীর উপরে এই ওষুধ ৫ দিন প্রয়োগ করার পরেও একই রকম সদর্থক ফল দেখা গিয়েছিল। তাঁর মতে, আরও কিছু তথ্যের প্রয়োজন থাকলেও একথা বলা চলে যে, রেমডেসিফার প্রয়োগ নিরাপদ এবং তার জেরে করোনা সংক্রমণ উপশমের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।
এর আগে স্ট্যানফোর্ড মেডিসিন-কে দেওয়া সাক্ষাৎকালে সুব্রমণিয়ন জানিয়েছিলেন, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে যে কোনও ওষুধের তিন পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালু করার আগে দীর্ঘ কয়েক বছরের গবেষণা এবং বেশ কিছু মাস ধরে পরিকল্পনা করা দরকার।
নাক, মুখ বা চোখের মতো বায়ু প্রবেশপথ ধরেই মানবশরীরে করোনাভাইরাস সংমক্রমণ ঘটে। শরীরে প্রবেশের পরে এই জীবাণু ফুসফুসের বায়ু চলাচলকারী পথের বহির্ভাগে থাকা কোষের ভিতরে ঘাঁটি গাড়ে। এর পরে দ্রুত নিজের সংখ্যাবৃদ্ধি করতে শুরু করে মারাত্মক এই ভাইরাস, যার ফলে চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুসফুস।
যে কোনও অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের মতোই রেমডেসিভার সৃষ্টির সময় ভাইরাসের এই আচরণ রোধ করার বিষয়টি মাথায় রেখেছেন বিজ্ঞানীরা। এই ওষুধের প্রধান কাজ হল কোষ থেকে কোষে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রুখে দেওয়া এবং ভাইরাসের সংখ্যাবৃদ্ধি আটকে দেওয়া।
বিশ্বের কোথাও এখনও পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ চিকিৎসায় রেমডেসিভার প্রয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সর্বার্থে সফল হওয়ার পরেই বাজারে এই ওষুধ আত্মপ্রকাশ ঘটাতে পারে বলে জানা গিয়েছে।