বিশ্বকে কোভিডমুক্ত করতে প্রতিষেধক টিকা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে ভারতের ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি। মঙ্গলবার এই মন্তব্য করলেন বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সহ-চেয়ারম্যান বিল গেটস।
এ দিন COVID-19: India's War Against The Virus শীর্ষক তথ্যচিত্রে গেটস বলেছেন, ‘বিশাল আয়তন, অজস্র শহর এবং বিপুল জনসংখ্যার কারণে অতিমারীর বিরুদ্ধে ভারতের লড়াই নিঃসন্দেহে কঠিন চ্যালেঞ্জ।’
এই প্রেক্ষিতে ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির উদ্যম সম্পর্কে বিল গেটস বলেন, ‘ভারতের ক্ষমতা বিশাল, কারণ এ দেশেই রয়েছে বিশ্বে বিপুল পরিমাণ ওষুধ ও টিকা সরবরাহে যুক্ত উৎপাদক সংস্থাগুলি। আপনারা হয়ত জানেন, সারা বিশ্বে ভারত যে পরিমাণ টিকা তৈরি করে তা অন্য কোনও দেশ করে না। উৎপাদকের তালিকায় সবার উপরে রয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউ, যা দেশে বৃহত্তম। তবে তা ছাড়াও রয়েছে বায়ো ই, ভারত বায়োটেক ইত্যাদি সংস্থা। তারা সকলেই করোনাভাইরাস দমনের ভ্যাক্সিন উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ করছে। এর আগেও বহু রোগের টিকা তৈরির ক্ষমতা কাজে লাগিয়েই তারা এই অভিযানে নেমেছে।’
কোভিড টিকা সংক্রমণের থেকে দীর্ঘস্থায়ী সুরক্ষা দিতে পারবে কি না জানতে চাওয়া হলে গেটস বলেন, ‘প্রতিষেধকের দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করার সময় এখনও আসেনি। এই মুহূর্তে জীবাণু সংক্রমণের জেরে অ্যান্টিবডি ও টি-সেল প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্যই আমাদের হাতে নেই। তবে যে ভ্যাক্সিনগুলি এখন ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পর্যায়ে রয়েছে, তার ফলাফল কয়েক মাসের মধ্যে পাওয়া উচিত। তখনই এই সব জটিল প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সম্ভব।’
ভ্যাক্সিন ছাড়া অতিমারীর হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া কি আদৌ সম্ভব? টিকা ছাড়া গোষ্ঠী রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা উৎপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা কতদূর?
গেটস বলেন, ‘গোষ্ঠী প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে হলে প্রথমত বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বেন এবং তার জেরে অধিকাংশের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে। তচবে এই প্রক্রিয়ায় আরও কয়েক লাখ মৃত্যুও এড়ানো যাবে না। দ্বিতীয়ত, গোষ্ঠী প্রতিরোধ ক্ষমতা বরাবরই স্বল্পমেয়াদী হয়। শুধু তাই নয়, এতে বেশ কিছু মানুষের আ্রবার সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যায়। তবে দুই ক্ষেত্রেই ভ্যাক্সিন জরুরি।’
গেটস জানিয়েছেন, বিশ্বের ধনী দেশগুলি ভ্যাক্সিনের আগাম বুকিং করে রাখলেও দরিদ্র ও সঙ্গতিহীন মানুষ যাতে টিকা ব্যবহার করার সুযোগল পান, সে দিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখেছে তাঁর সংস্থা। এই বিষয়ে একাধিক দেশে তাঁরা কাজ করছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি গ্যাভি সংস্থার সঙ্গে তাঁর ফাউন্ডেশনের গাঁটছড়া বাঁধার কথাও সবিস্তারে জানিয়েছেন। ভারতে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে কাজ করছে গ্যাভি। কোভ্যাক্স প্রকল্পে তারা যুগ্ম ভাবে টিকা তৈরি করার চেষ্টায় করছে। এই প্রকল্পে একাধিক রাষ্ট্রকে যুক্ত করা হয়েছে যাতে ভ্যাক্সিন পরীক্ষা, উৎপাদন ও সরবরাহে কোনও অসঙ্গতি বা বিচ্যুতি না ঘটে, জানিয়েছেন গেটস।