যাত্রীর লাগেজ, ব্যাগ সহ সমস্ত মূল্যবান জিনিসের দায়িত্ব থাকে রেলের কাঁধে। এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কোনও যাত্রীর কিছু হারিয়ে গেলে, দায়ী রেল কর্তৃপক্ষই। সেই কারণেই এবার ভারতীয় রেলওয়ের কাঁধে বড় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চাপ দিয়েছে একটি কনজিউমার আদালত। ভারতীয় রেলের পরিষেবাগুলিতে অবহেলা ও ত্রুটির কথা উল্লেখ করে, আদালত রেলেকে নির্দেশ দিয়েছে, যে যাত্রীর যাত্রার সময় লাগেজ চুরি হয়ে গিয়েছে, তাঁকে ১.০৮ লক্ষ টাকার বেশি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
২০১৬ সালের জানুয়ারিতে ঝাঁসি এবং গোয়ালিয়রের মধ্যে ভ্রমণ করার সময় অনুমোদিত যাত্রীর কাছ থেকে ৮০,০০০ টাকার মূল্যবান জিনিস সহ একটি ব্যাগ চুরি হয়ে গিয়েছিল। ওই যাত্রী মালওয়া এক্সপ্রেসের সংরক্ষিত কোচে ভ্রমণ করছিলেন। অভিযোগকারী নতুন দিল্লি থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন। ব্যাগ চুরি হয়ে যাওয়ার পর সরাসরি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। জেলা ভোক্তা বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন এদিন এই মামলারই শুনানি করছিল।
কী বলেছে আদালত
রেল যদিও প্ৰথমে যুক্তি দিয়েছিল যে অভিযোগকারী তাঁর লাগেজ নিয়ে অসতর্ক ছিলেন এবং এর জন্য কোনও বুকিংও করেননি। কমিশন রেলওয়ের এই যুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছে। বলা হয়েছে, নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণের পাশাপাশি যাত্রীদের লাগেজ রক্ষার দায়িত্ব রেলের। কমিশনের চেয়ারম্যান ইন্দ্রজিৎ সিং এবং সদস্য রশ্মি বনসাল বলেছেন যে মামলাটি শোনার এখতিয়ার রয়েছে। এরপর, কমিশন ৩ জুন পাস করা আদেশে বলেছে যে এটি ছাড়াও ভারতীয় রেলওয়ের সাধারণ ব্যবস্থাপনার অফিস কমিশনের এক্তিয়ারের অধীনে আসে।
কমিশন আরও বলেছে, যেইভাবে এই ঘটনা ঘটেছে এবং মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হয়েছে। তারপরে অভিযোগকারী যথাযথ তদন্তের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে এফআইআর দায়ের করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু নিজেরই আইনি অধিকার আদায়ের জন্য তাঁকে সব ধরনের অসুবিধা ও হয়রানির সম্মুখীন হতে হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে অভিযোগকারী ভারতীয় রেলের বিরুদ্ধে পরিষেবায় অবহেলা এবং ঘাটতির মামলা দায়ের করেছিলেন। সংরক্ষিত টিকিটে, যাত্রার সময় ব্যাগে রাখা তাঁর লাগেজ চুরি হয়ে গিয়েছিল। আর রেলওয়ে বা তার কর্মচারীরা সঠিক পরিষেবা দিতে নিশ্চয়ই অবহেলা করেছিলেন, কারণ কোনও অবহেলা বা ঘাটতি না থাকলে এমন ঘটনা কখনওই ঘটত না। অভিযোগকারী, তাঁর ভ্রমণের সময় যে জিনিসপত্র বহন করেননি, তা অস্বীকার করার মতো অন্য কোনও প্রমাণ নেই। তাই অসুবিধা, হয়রানি এবং মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করার জন্য অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ হিসাবে যাত্রীকে ২০,০০০ টাকা এবং মামলার খরচের জন্য অতিরিক্ত ৮,০০০ টাকা প্রদান করা হয়েছে।