স্পেশাল (বিশেষ ট্রেন) তো চলছেই, এবার বিশেষ ‘ক্লোন’ ট্রেন চালানোরও পরিকল্পনা করছে ভারতীয় রেল। যে ট্রেনগুলির চাহিদা বেশি, সেগুলির ওয়েটিং লিস্টে থাকা যাত্রীদের জন্য সেই ট্রেন চালানো হতে পারে।
আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ধাপে ধাপে সেই ‘ক্লোন’ ট্রেন চালু করতে পারে রেল। শীঘ্রই সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করা হবে। রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান ভি কে যাদব বলেছেন, 'কোন ট্রেনের দীর্ঘ ওয়েটিং লিস্ট, তা মূল্যায়ন করতে সব ট্রেনের (আপাতত যে বিশেষ ট্রেন চলছে) উপর নজর রাখবে রেল। যেখানেই কোনও নির্দিষ্ট ট্রেনের চাহিদা বেশি থাকবে, যেখানেই ওয়েটিং লিস্ট দীর্ঘ থাকবে, সেখানেই আমরা মূল ট্রেনের আগে একটি ক্লোন (একই গন্তব্যে যাবে) ট্রেন চালাব, যাতে যাত্রীরা যেতে পারেন।'
তিনি জানিয়েছেন, মূল ট্রেনের তুলনায় ‘ক্লোন’ ট্রেনে স্টপেজ সংখ্যা কম হতে পারে। যাত্রীদের চাহিদা পূরণের জন্য সংশ্লিষ্ট রুটের (যেমন নয়াদিল্লি-হাওড়া) বড় বড় স্টেশনগুলিতে সেই ট্রেন দাঁড়াবে।
‘ক্লোন’ ট্রেন কী?
মূল ট্রেন ও ক্লোন ট্রেনের নম্বর একই হবে। যেমন ০২৩০১ হাওড়া-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের সব আসন সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে। তারপরও ওয়েটিং লিস্টের তালিকা দীর্ঘ। সেক্ষেত্রে মূল হাওড়া-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের আগে একটি ট্রেন দেবে। সেটির নম্বরও হবে ০২৩০১। শুধুমাত্র ওয়েটিং লিস্টে থাকা যাত্রীদের জন্য সেই ‘ক্লোন’ ট্রেন চলবে।
রেল মন্ত্রকের মুখপাত্র ডিজে নারায়ণ ‘মিন্ট’-কে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ক্লোন ট্রেন থ্রি-টিয়ার এসির হবে এবং নির্ধারিত বিশেষ ট্রেনের আগে যাবে। সম্ভাব্য যাত্রীদের সুবিধার্থে ক্লোন ট্রেনের বিষয়ে ভালোভাবে প্রচার করা হবে। রুটগুলি চূড়ান্ত করা হচ্ছে।’
মূল ট্রেন ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের চার ঘণ্টা আগে সংরক্ষণ তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর ওয়েটিং লিস্টে থাকা যাত্রীদের ‘ক্লোন’ ট্রেনে কোথায় আসন পড়েছে, তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
কেন্দ্রের এক শীর্ষ কর্তা ‘মিন্ট’-কে জানিয়েছেন, কোনও ট্রেনের চাহিদা নিয়ে রেলের স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হওয়ার ফলে এটাই ‘ক্লোন’ ট্রেন শুরু করার সেরা সময়। তিনি বলেন, ‘রেকগুলিকে এমনি ফেলে রাখার থেকে যে রুটে চাহিদা বেশি সেখানে (বাড়তি) ট্রেন চালানো ভালো। আমরা এটা আগেই চালু করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু উপযুক্ত উপায় পাওয়া যায়নি।’
চ্যালেঞ্জ
তবে রেলের সেই নয়া পরিকল্পনার ক্ষেত্রে মূল চ্যালেঞ্জ হল রেকের সংখ্যা। ‘ক্লোন’ ট্রেনের জন্য রেলের বাড়তি রেকের প্রয়োজন হবে। সেজন্য প্রাথমিকভাবে বড় শহরগুলিতে সেই ট্রেন চালু করা হবে, যেখানে বাড়তি রেক আছে। পাশাপাশি রেলের বুকিং সিস্টেমও (প্যাসেঞ্জার রিজার্ভেশন সিস্টেম) উন্নত করতে হবে। বর্তমানে ৩এসির ক্ষেত্রে ৩০০, ফার্স্ট ক্লাসে ৩০ এবং সেকেন্ড ক্লাসে ১০০, স্লিপার কোচের ওয়েটিং লিস্ট সংখ্যা ৪০০ ছুঁলে রেল সংশ্লিষ্ট ট্রেনের বুকিং বন্ধ করে দেয়। এবার সেই ব্যবস্থাও পরিবর্তন করতে হবে।