রেজাউল এইচ লস্কর
রবিবার ভারত ও পাকিস্তান তাদের পারমাণবিক শক্তি সম্পর্কে পরস্পরের কাছে তথ্য় বিনিময় করল। তবে পারস্পরিক শত্রুতা চরমে উঠলেও এগুলি দিয়ে হামলা করা হবে না। ১৯৯২ সাল থেকেই এই পারস্পরিক তথ্য় আদানপ্রদানের প্রথা মেনে চলা হয়।
পাশাপাশি ভারত ও পাকিস্তানের জেলে দিন কাটাচ্ছেন এমন দুদেশের বন্দিদের সম্পর্কেও এদিন পারস্পরিক তালিকা আদানপ্রদান হয়েছে। সিভিলিয়ান বন্দি, হারিয়ে যাওয়া ডিফেন্সের লোকজন, নৌকা সহ মৎস্যজীবীদের দ্রুত মুক্তির দাবিও জানিয়েছে ভারত।
এদিকে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে ভারত ও ইসলামাবাদ তাদের নিউক্লিয়ার ইনস্টলেশন সম্পর্কে পরস্পরকে অবহিত করেছে। তবে এনিয়ে কোনও দেশই বিস্তারিত কোনও বিবরণ বাইরে প্রকাশ করেনি।
বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ১৯৮৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর দুপক্ষের মধ্য়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ১৯৯১ সালের ২৭ জানুয়ারি বিষয়টি কার্যকরী হয়। সেই চুক্তিতে জানানো হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান দুদেশই তাদের নিউক্লিয়ার ইনস্টলেশন সম্পর্কে পরস্পরকে অবহিত করবে। প্রতি বছর ১লা জানুয়ারি দুই প্রতিবেশী দেশ পরস্পরের মধ্যে এই তথ্য আদানপ্রদান করবে বলে চুক্তি করা হয়েছিল।
১৯৯২ সালের ১ জানুয়ারি প্রথম এই ধরনের তথা আদানপ্রদান হয়েছিল। তারপর থেকে প্রতিবছর ১লা জানুয়ারি দুদেশের মধ্যে তথ্য আদানপ্রদান হয়ে থাকে। এনিয়ে ৩২ বার এই ধরনের তথ্য় আদানপ্রদান হল বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে ২০০৮ সালের চুক্তি মোতাবেক বছরে দুবার ভারত ও পাকিস্তান দুদেশের মধ্য়ে বন্দি সংক্রান্ত তথ্য আদানপ্রদান করে। অর্থাৎ পাকিস্তানের জেলে ভারতীয় কারা বন্দি অবস্থায় রয়েছেন ও ভারতের জেলে পাকিস্তানের কারা বন্দি অবস্থায় রয়েছেন তার তালিকা দুদেশ পরস্পরের হাতে তুলে দেয়। একবার ১ জানুয়ারি এই ধরনের তালিকা তুলে দেওয়া হয়। দ্বিতীয়বার ১ জুলাই এই তালিকা তুলে দেওয়া হয়।
বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে,বর্তমানে ভারতের হেফাজতে ৩৩৯জন পাকিস্তানি সিভিলিয়ান বন্দি ও ৯৫জন মৎস্যজীবী বন্দি অবস্থায় রয়েছেন। অন্যদিকে পাকিস্তান জানিয়েছে, ৫১জন সিভিলিয়ান ও ৬৫৪জন মৎস্যজীবী তাদের জেলে রয়েছেন। তারা হয় ভারতীয় অথবা বিশ্বাস করা হচ্ছে তারা ভারতীয় বলে।
এদিকে ৫১জন পাকিস্তানি বন্দির নাগরিকত্বকে নিশ্চিত করার ব্যাপারেও ভারতের তরফে পাকিস্তানকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি পাকিস্তানের জেলে বন্দি ভারতীয় বলে যাদের বলা হচ্ছে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার ব্য়াপারেও ভারতের তরফে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে পাকিস্তান ৫১জন সিভিলিয়ান ও ৯৪জন পাকিস্তানি মৎস্যজীবীকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে। ৬৫ ও ৭১ এর যুদ্ধে হারিয়ে সেনাদের ব্যাপারে জানার জন্য কূটনৈতিক ক্ষেত্রে অনুমতিও চেয়েছে পাকিস্তান।