বিশ্বে অ্ভূতপূর্ব সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ৷ মার্কিন এআই সংস্থা বেইন অ্যান্ড কোম্পানির সমীক্ষা রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়েছে, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে নজির সৃষ্টি করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে ভারত ৷ ২০২৭ সালের মধ্যে ভারতে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে কর্মসংস্থান আরও বাড়বে ৷ প্রায় ২.৩ মিলিয়ন (২৩ লাখ) কর্মসংস্থান তৈরি হবে। বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে পারদর্শী প্রযুক্তিবিদের চাহিদা ৬ থেকে সাড়ে ৬ লক্ষ ৷
বেইন অ্যান্ড কোম্পানির পার্টনার সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ভারতের কাছে বৈশ্বিক এআই হাব হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার অনন্য সুযোগ রয়েছে। ২০২৭ সালের মধ্যে দেশে এআই-তে চাকরির সুযোগ দেড় থেকে দু'গুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগকে কাজ লাগিয়ে উন্নত প্রযুক্তি এবং দক্ষতার উপর ভিত্তি করে যাতে উন্নত কাজ করতে পারে, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে ৷
তাঁর কথায়, 'যদিও বর্তমানে এআই দক্ষতার ঘাটতি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। কিন্তু কোনও কিছুই অসম্ভব নয়। এই সমস্যা মোকাবিলা করতে ব্যবসাগুলি যেভাবে এআই প্রতিভাকে আকৃষ্ট, বিকাশ করে, তার ক্ষেত্রে মৌলিক পরিবর্তন প্রয়োজন। কোম্পানিগুলিকে প্রথাগত নিয়োগ পদ্ধতির বাইরে বেরোতে হবে এবং দক্ষতার বৃদ্ধিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে ও একটি উদ্ভাবন-চালিত ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী বার্ষিক এআইয়ে কর্মসংস্থান বেড়েছে ২১ শতাংশ হারে। ওই একই সময়ে বেতন বৃদ্ধির হার বার্ষিক ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবুও দক্ষ প্রার্থীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বাড়েনি। যার ফলে দক্ষতার ব্যবধান বৃদ্ধি পাচ্ছে যা বিশ্বব্যাপী এআই গ্রহণযোগ্যতাকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। এই দক্ষতার ঘাটতি দেশে প্রায় ২০২৭ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বিশ্বব্যাপী এর প্রভাব ভিন্ন হবে।
ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি দুটি এআই চাকরির মধ্যে একটি করে খালি থাকবে। আগামী দুই বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এআই চাকরির চাহিদা ১.৩ মিলিয়নেরও বেশি হতে পারে। ফলে সে দেশে ৭০০,০০০ কর্মীকে পুনরায় দক্ষতা বৃদ্ধির প্রয়োজন। অন্যদিকে, জার্মানিতে ২০২৭ সালের মধ্যে সবচেয়ে বড় এআই দক্ষতার ঘাটতি দেখা দিতে পারে। প্রায় ৭০ শতাংশ এআই ক্ষেত্রে চাকরি খালি হয়ে যাবে। ব্রিটেনেও ৫০ শতাংশেরও বেশি দক্ষ কর্মীর ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ২০২৭ সালে ২,৫৫,০০০ এআই পদ পূরণের জন্য মাত্র ১০৫,০০০ এআই কর্মী থাকবে। একইভাবে অস্ট্রেলিয়ায় ২০২৭ সালের মধ্যে ৬০,০০০-এরও বেশি দক্ষ কর্মীর ঘাটতি দেখা দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।