তিব্বতের ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১২৬। আহতদের সংখ্যা ২০০ ছুঁইছুঁই। সেই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করল ভারত। তবে সেই শোকবার্তায় একবারের জন্যও চিনের নাম করা হয়নি। যে চিন গত কয়েক মাসে তিব্বতের নাম পালটে শিচাং করার চেষ্টা আরও জোরদার করেছে। সেই আবহেই মঙ্গলবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ‘ভয়াবহ ভূমিকম্পের জেরে তিব্বত স্বশাসিত অঞ্চলে প্রাণহানি এবং সম্পত্তি নষ্টের যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে ভারত সরকার এবং ভারতের মানুষ সমবেদনা প্রকাশ করছেন। মৃত ও আহত এবং তাঁদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করছি আমরা।’
মৃতদের জন্য প্রার্থনা করছি, শোকবার্তা দলাই লামার
সেই ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন দলাই লামাও। যিনি ভারতের হিমাচল প্রদেশের ধরমশালায় থাকেন। চিনের আগ্রাসনের পরে ১৯৫৯ সালে তিব্বত থেকে চলে আসেন দলাই লামা। নিজের জন্মভূমিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনায় তিনি গভীরভাবে শোকপ্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, 'যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের জন্য প্রার্থনা করছি। যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।'
তারইমধ্যে সংশ্লিষ্ট মহলের আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ তিব্বতে ভূমিকম্প হয়েছে, সেটা বিপজ্জনক শ্রেণির আওতায় পড়ে। চিনের ভূমিকম্প কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৮। তবে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পের মাত্রা ৭.১-তে ঠেকেছিল। যে ভূমিকম্পের জেরে নেপাল, ভুটান এবং ভারতের একাংশেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
১০ কিমি গভীরে উৎসস্থল, সঙ্গে পরপর আফটারশক
আর ভূমিকম্পের উৎসস্থল তিব্বতে হওয়ায় স্বভাবতই সেখানে ধ্বংসলীলা চলেছে। চিনা ভূমিকম্প সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পের উৎসস্থল। আর তার ফলে প্রবল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেইসঙ্গে এক ঘণ্টার মধ্যে একাধিক ‘আফটার শক’ অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে সেগুলির মাত্রা চার থেকে পাঁচের মধ্যে ছিল বলে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে।
আরও বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা
সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাংবাদিক বৈঠকে আধিকারিক জানিয়েছেন যে যেখানে ভূমিকম্প হয়েছে, সেখানে ৩,৪০০-র বেশি উদ্ধারকারী পাঠানো হয়েছে। পাঠানো হয়েছে ৩৪০ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে। তাঁরা উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। চিনা টিভির ফুটেজে দেখা গিয়েছে যে ধ্বংসস্তূপ থেকে শিশু-সহ অনেক মানুষকে টেনে বের করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ১২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। যে সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।