চার বছরের সর্বনিম্ন স্তরে নেমে যেতে পারে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে আশঙ্কাপ্রকাশ করা হয়েছে যে চলতি অর্থবর্ষে (২০২৪-২৫ অর্থবর্ষ) ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৬.৪ শতাংশে নেমে যেতে পারে। আর সেটাই যদি হয়, তাহলে কোভিড-কালের (২০২০-২১ অর্থবর্ষ) পরে চলতি বছরে আর্থিক বৃদ্ধির হার সবথেকে তলানিতে ঠেকবে। সেইসময় ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার নেতিবাচক হয়ে গিয়েছিল (-৫.৮ শতাংশ)। গত অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৮.২ শতাংশ ছিল। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ছিল ৬.৬ শতাংশ। আর ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে সেটা সাত শতাংশে ঠেকেছিল।
আশঙ্কা ছিল, সেটা আরও বাড়ল
এমনিতে চলতি অর্থবর্ষে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার যে খুব ভালো কিছু হবে না, সেটার আশঙ্কা আগেই করা হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) তরফে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল যে চলতি অর্থবর্ষে ভারতের বৃদ্ধির হার ৬.৬ শতাংশ হতে পারে। আর কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সেটাও আরও কমিয়ে পূর্বাভাস দেওয়া হল। যে আর্থিক বৃদ্ধির হারের পূর্বাভাসের ভিত্তিতে সাধারণ বাজেট তৈরি করা হবে। যা আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
ভরাডুবি উৎপাদন ও পরিষেবা ক্ষেত্রের
কিন্তু এবার ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার এত কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে কেন? কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উৎপাদন এবং পরিষেবা ক্ষেত্রের হাল এবার বেশ খারাপ। আর সেটার প্রভাব পড়েছে আর্থিক বৃদ্ধির উপরে। গত বছর যেখানে উৎপাদন ক্ষেত্রের বৃদ্ধির হার ৯.৯ শতাংশে ঠেকেছিল, এবার সেটা কমে ৫.৩ শতাংশে ঠেকতে পারে। আর পরিষেবা ক্ষেত্রের বৃদ্ধির হার হতে পারে ৫.৮ শতাংশ। যা গত অর্থবর্ষে ছিল ৬.৪ শতাংশ।
কৃষির উত্থানেও লাভ হবে না!
আর সেই জোড়া ধাক্কার কারণেই চলতি অর্থবর্ষে যে ভারতের কৃষিক্ষেত্রের উত্থানের বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যেতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত অর্থবর্ষে কৃষিক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ছিল ১.৪ শতাংশ। সেটা একলপ্তে বেড়ে ৩.৮ শতাংশে ঠেকতে পারে। কিন্তু উৎপাদন এবং পরিষেবা ক্ষেত্রের হার এতটাই খারাপ হবে যে কৃষিও বাঁচাতে পারবে না বলে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান পূর্বাভাসে উঠে এসেছে।
আরও হাল খারাপ হতে পারে?
তবে কেন্দ্রীয় সরকার যে পূর্বাভাস দিয়েছে, চলতি অর্থবর্ষে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার তার থেকেও কম হতে পারে বলে একটি বিদেশি ব্রোকারেজ সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এইচএসবিসির তরফে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে যে চলতি অর্থবর্ষে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৬.২ শতাংশে ঠেকতে পারে।