ভারতে এই প্রথম মহাকাশে পাড়ি দিতে চলেছে বেসরকারি সংস্থা রকেট। গত বুধবার ভারতের মহাকাশ সংস্থা ইসরো রকেট প্রস্তুতকারী সংস্থা স্কাইরুট অ্যারোস্পেসকে রকেট (বিক্রম-এস) উৎক্ষেপণের অনুমোদন দেয়। দেশের মধ্যে এমন উদ্যোগ এই প্রথম। স্কাইরুট নির্মিত রকেটটির নাম রাখা হয়েছে বিক্রম-এস।
আগামিকাল (১৮ নভেম্বর) শ্রীহরিকোটা থেকে পাড়ি দেবে এই মহাকাশযান। এই বিশেষ মুহূর্তের সাক্ষী হতে মুখিয়ে রয়েছে সারা দেশ। ১৮ তারিখ দিল্লি থেকে প্রধানমন্ত্রী দফতরের তরফে উপস্থিত থাকবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং। তাঁর কথায়, ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি এই যানটির উৎক্ষেপণ ইসরোর মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে একটি বড় মাইলস্টোন।
প্রসঙ্গত, মহাকাশ গবেষণা ও মহাকাশযান নির্মাণে ব্যক্তিগত উদ্যোগের সুযোগ আগেই খুলে দেওয়া হয়েছিল। দু'বছর আগে প্রধানমন্ত্রী মহাকাশ গবেষণা ও মহাকাশযান নির্মাণের কাজে ব্যক্তিগত উদ্যোগকে আহ্বান জানান। এর আগে পর্যন্ত এই ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সংস্থার কোনও বিনিয়োগ ছিল না। কেন্দ্র থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরেই এক এক করে বেশ কিছু সংস্থা আগ্ৰহ দেখাতে শুরু করে। অল্প সময়ের মধ্যে ১০২ সংস্থা মহাকাশ গবেষণার কাজে জড়িয়ে পড়ে। উৎক্ষেপন যান তৈরি করা থেকে ন্যানো স্যাটেলাইট নির্মাণ, বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগত উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। এছাড়াও এই ধরনের উদ্যোগের মধ্যে ছিল গ্ৰাউন্ড সিস্টেম তৈরি ও গবেষণার কাজও। তবে রকেট উৎক্ষেপণের কাজে এখনও পর্যন্ত কেউই এগিয়ে আসেনি। স্কাইরুট সেক্ষেত্রে প্রথম সংস্থা হয়েছে। স্কাইরুটের উৎক্ষেপণ সফল হলে আরও অনেক সংস্থাই এমন রকেট নির্মাণে আগ্ৰহী হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
জিতেন্দ্র জানান, এই মহাকাশযানটি সিঙ্গল স্টেজ স্পিন স্টেবিলাইজড সলিড প্রপেল্যান্ট রকেট। যানটির ওজন প্রায় ৫৫০ কেজি। প্রথম উৎক্ষেপণ বলে স্কাইরুটের তৈরি রকেটটি একটি সাব-অরবিটাল যান। উৎক্ষেপণের পর যানটি ১০১ কিমি উচ্চতা পর্যন্ত যাবে। এরপর স্বাভাবিক নিয়মে সমুদ্রের জলে পড়ে ধ্বংস হয়ে যাবে। মোট ৩০০ সেকেন্ড অর্থাৎ ৫ মিনিট ধরে চলবে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি। আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলে সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ এই উৎক্ষেপণ হবে।
জিতেন্দ্র আরও বলেন, মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হয় দুই বছর আগে। এরপর স্কাইরুটই প্রথম ইসরোর সঙ্গে মউ চুক্তি স্বাক্ষর করে। তাদের তৈরি মহাকাশযানই এবার পাড়ি দিচ্ছে মহাকাশে।