জুন ত্রৈমাসিকে ২০.১% বৃদ্ধি পেয়েছে ভারতের মোট অর্থনীতি (GDP)। নিশ্চিত ভাবেই এটা স্বস্তির খবর নীতি নির্ধারকদের কাছে। তবে এখনই ভারতীয় অর্থনীত কোভিডের ছায়া থেকে বেরিয়ে এসেছে সেটা নিশ্চিত করে বলা চলে না। এর কারণ হল এই জিডিপির পরিসংখ্যান গত বছরের জুন ত্রৈমাসিকের নিরিখে। সেই সময় ভারতীয় অর্থনীতি ছিল ঐতিহাসিক ভাবে সবচেয়ে নীচু বিন্দুতে। তার সাপেক্ষে এবার ২০ শতাংশ বাড়ল অর্থনীতি।
আপাতদৃষ্টিতে গত বছর জুন ত্রৈমাসিকের তুলনায় এই বৃদ্ধি অনেকটাই মনে হতে পারে। তবে, গত বছর জুন ত্রৈমাসিকের সময়েই কড়া লকডাউন ছিল। ফলে সেই সময়ে প্রায় ২৪.৪% হারে সঙ্কুচিত হয়েছিল অর্থনীতি।
ফলে চলতি অর্থবর্ষে অর্থনীতি সেভাবে ঘুরে না দাঁড়ালেও, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিকের দিকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ২০.১% জিডিপি বৃদ্ধি খাতায় কলমে চমকপ্রদ হতে পারে। তবে বাস্তবে অর্থনীতি এখনও কড়া পরীক্ষার মুখে।
১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে এটি এখনও পর্যন্ত দ্রুততম জিডিপি বৃদ্ধির হার। তবে তা সত্ত্বেও এই নিয়ে উচ্ছসিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। গত বছর এই একই ত্রৈমাসিকে রেকর্ড সংকোচন হয়েছিল। ফলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই এত বেশি বৃদ্ধি মনে হচ্ছে। এটিকে মূলত নিম্ন-ভিত্তিক (Base Level) প্রভাব বলা হয়। অর্থাত্ খাতায় কলমে বিপুল উন্নতি হয়েছে মনে হলেও বাস্তবে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ততটা ভাল নয়।
গত অর্থবর্ষে ৭.৩% জিডিপি সংকোচন হয়েছে ভারতের। মূলত করোনা লকডাউনই এর জন্য দায়ী। তুলনামূলকভাবে চলতি অর্থবর্ষে দ্বিতীয় ওয়েভের সেভাবে প্রভাব পড়েনি। এর কারণ, প্রথম অর্থবর্ষের তুলনায় দ্বিতীয় অর্থবর্ষে লকডাউনের কড়াকড়ি অনেকটাই কম ছিল। মার্চ ত্রৈমাসিকে ১.৩% বৃদ্ধি পেয়েছিল অর্থনীতি।
রফতানি প্রায় ৩৯ শতাংশ বেড়েছে প্রথম ত্রৈমাসিকে যেটি জিডিপির প্রায় এক চতুর্থাংশ পরিমাণ। সব মিলিয়ে দ্বিতীয় ওয়েভ থাকা সত্বেও এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে ভারতীয় অর্থনীতি দ্রুত হারে পুরনো স্থানে ফেরার পথে অগ্রসর হয়েছে। এটিই নিশ্চিত ভাবে মোদী সরকারকে আশ্বস্ত করবে যে করোনা যদি আরও স্তিমিত হয়ে , অর্থনীতির পালে আরও দ্রুত হাওয়া লাগবে।