বয়স ৮৪। পার্কিনসন রোগে আক্রান্ত। বৃদ্ধা মহিলা। এমন একজনের সঙ্গে ঘটে গেল নির্মম ও নিষ্ঠুর ঘটনা। যা গোটা রাজধানীকে হিলিয়ে রেখে দিল। এই বৃদ্ধা জয়পুর থেকে নয়াদিল্লি এসেছিলেন বিমানে। তারপর প্রয়োজন ছিল একটি হুইলচেয়ারের। যা বিমানবন্দরকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এই হুইলচেয়ার পেতে নয়াদিল্লির বিমানবন্দরে পার্কিনসন রোগে আক্রান্ত ৮৪ বছরের বৃদ্ধাকে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হল বলে অভিযোগ। যা প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে গোটা দেশে। রবিবার এলায়েন্স এয়ার বিমানে করে এসেছিলেন ওই বৃদ্ধা। এই ঘটনা নিয়ে শোরগোল শুরু হতেই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে।
এই এলায়েন্স এয়ার সরকারি মালিকানাধীন সংস্থা। সেখানে এমন ঘটনা কেমন করে ঘটল? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও এই বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে ক্ষমা চাওয়া হয়েছে এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু এত বড় একটা ঘটনা শুধু ক্ষমা চেয়ে নিলে মিটে যাবে! আশ্চর্য সকলেই। এই বৃদ্ধা তাঁর ছেলের সঙ্গে সফর করছেন। বারবার তাঁরা কাকুতি–মিনতি করেও হুইলচেয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাননি বলেই অভিযোগ। এলায়েন্স এয়ার এই অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেছে। আর এই বিমান সংস্থা ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সার্ভিস অপারেটর হিসাবেও কাজ করে।
আরও পড়ুন: ‘রাশ ক্লিয়ার করা রেলের দায়িত্ব’, নবান্ন থেকে রেলকে ২১ জুলাই নিয়ে কড়া বার্তা মমতার
এই ঘটনার দায় কেউ এড়াতে পারছে না। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে বিমান সংস্থা এলাযেন্স এয়ার এখন মানুষের প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এই বিষয়ে এলায়েন্স এয়ার বিমান সংস্থার অ্যাসিস্টেন্ট জেরারেল ম্যানেজার (কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস) মনোহর তাফচি সংবাদসংস্থা পিটিআই–কে ঘটনাটি নিয়ে বলেন, ‘একটা কিছু ঘটেছে। আমরা গোটা ঘটনাটিকে নানা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছি। আমরা বিষয়টি গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং এজেন্সির থেকে নিয়েছি। যাদের প্যাসেঞ্জারকে হুইলচেয়ার দেওয়ার কথা। আমরা এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি। বৃদ্ধার ছেলের সঙ্গে কথা বলেছি। আর যোগাযোগ রাখছি।’
এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি পোস্ট করার পর। রাত ৯টা ২২ মিনিটে বিমানে করে অবতরণ করেন ওই বৃদ্ধা। তারপর সেখান থেকে তিনি পার্কিং লটে আসেন। সেখানে এসে ওই বৃদ্ধা হুইলচেয়ারের জন্য বিমানবন্দরের কর্মীর কাছে আর্জি জানান। তখন তাঁকে সেই কর্মী জানান, এই হুইলচেয়ার কিনতে হবে। এমনিতে পাওয়া যাবে না। এই অভিযোগই লেখা হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তারপর ২০ মিনিটের মধ্যে খালি হয়ে যায় বিমানবন্দর। সমস্ত যাত্রী চলে গেলেও তাঁকে হুইলচেয়ারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এমনকী সেখানে এসি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন বৃদ্ধা বলে অভিযোগ। তখন তাঁর ছেলে তাঁকে কোনওরকমে ওখান থেকে বের করেন। তাঁর ছেলেও সাহায্য চেয়েছিলেন। কিন্তু পাননি। তারপর একটা হুইলচেয়ার কাছে আছে দেখে টেনে নিয়ে এসে মাকে বসান। এই গোটা ঘটনার কথা বিমান চলাচল মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় এবং এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়াকে জানানো হয়েছে।