পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে পাকিস্তানকে সাহায্য করছে চিন। সম্প্রতি গুজরাতের কান্দালা বন্দরে চিনা জাহাজ থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অটোক্লেভ বাজেয়াপ্ত হওয়ার পর এমনটাই মনে করছেন ভারতীয় আধিকারিকরা।
নির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ৩ ফেব্রুয়ারি করাচির কাশিম বন্দরে যাওয়ার পথে ওই চিনা জাহাজকে আটকায় শুল্ক বিভাগ। ১৭ দিন পর জাহাজটিকে করাচি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে জাহাজ থেকে একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল অটোক্লেভ বাজেয়াপ্ত করা হয়। যেটিকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডায়ার বলে দাবি করেছিলেন জাহাজের নাবিকরা।
যদিও মঙ্গলবার সকালে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গ্যানাইজেশনের (ডিআরডিও) বিশেষজ্ঞ ও ক্ষেপণাস্ত্র বিজ্ঞানীরা জানান, ১৮*৪ মিটারের অটোক্লেভটি বড়সড় হামলা চালানোর অস্ত্র তৈরির জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। নাম গোপন রাখার শর্তে এক উচ্চপদস্থ গোয়েন্দা আধিকারিক জানান, দূরপাল্লার (১,৫০০ কিমির বেশি) ক্ষেপণাস্ত্রের মোটর তৈরির জন্য অটোক্লেভটি ব্যবহার করা যেতে পারে। উপগ্রহ উৎক্ষেপণের মোটর তৈরির জন্য সেটিও ব্যবহার করা যেতে পারে। তাঁর কথায়, '১,৫০০-২,০০০ কিমি পথ অতিক্রম করতে পারা ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে পাকিস্তানের হাতে শাহিন ২ আছে। গত বছর মে'তে তা পরীক্ষা করা হয়েছিল।' ডিআরডিওয়ের বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এই অটোক্লেভটি উদ্ধারের ফলে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে ইসলামাবাদ ও বেজিংয়ের যোগসূত্র ফাঁস হয়ে গিয়েছে।
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বিষয়টি ইতিমধ্যে বিদেশ মন্ত্রক, জাতীয় সুরক্ষা পরিকল্পনাবিদদের জানানো হয়েছে। নিজস্ব আইন প্রয়োগের পাশাপাশি রাষ্ট্রসংঘকেও জানানোও হবে কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন জাতীয় সুরক্ষা পরিকল্পনাবিদরা।
উল্লেখ্য, প্রাথমিকভাবে পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে পাকিস্তানকে সাহায্য করত উত্তর কোরিয়া। পরবর্তীতে চিন সেই মদত জোগাতে থাকে। ইসলামাবাদের পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি একেবারেই দেশীয় নয়, বরং আশির দশক থেকে তা বেজিংয়ের মদতেই চলছে। আর সেজন্যই পাকিস্তানের জন্য পরমাণু সরবরাহকারী দলের (এনএসজি) দরজা না খোলা পর্যন্ত বেজিং সেই গ্রুপে ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করে আসছে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।