তিনশোরও বেশি নবাগতকে (ফ্রেশার্স) চাকরি থেকে ছাঁটাই করে দিল ইনফোসিস। সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভারতের অন্যতম বৃহত্তম তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার মাইসুরু ক্যাম্পাসে ওই ফ্রেশার্সদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ হয়েছিল। কিন্তু তারপর তিনবারের চেষ্টাতেও তাঁরা 'পরীক্ষায়' (ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্ট) উত্তীর্ণ হতে পারেননি। যদিও তথ্যপ্রযুক্তি কর্মচারীদের ইউনিয়ন নিটসের (ন্যাসেন্ট ইনফরমেশন টেকনোলজি এমপ্লয়িজ সেনেট) তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, ইনফোসিস যা দাবি করছে, তার থেকে আরও অনেক বেশি সংখ্যক ফ্রেশার্সকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এমনকী ফ্রেশার্সদের ভয় দেখাতে বাউন্সার ও নিরাপত্তারক্ষীদেরও মোতায়েন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের কাছে সরকারিভাবে অভিযোগ দায়েরের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
৭০০-র মতো কর্মচারীকে ছাঁটাই, দাবি নিটসের
তথ্যপ্রযুক্তি কর্মচারীদের ইউনিয়নের তরফে দাবি করা হয়েছে, যে ফ্রেশার্সদের ছাঁটাই করা হয়েছে, ২০২৪ সালের অক্টোবরে তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছিল। হাতে অফার লেটার পাওয়ার পরেও কাজে যোগ দেওয়ার জন্য দু'বছর অপেক্ষা হয়েছিল তাঁদের। পায়ের ঘাম মাথায় ফেলে কাজে যোগ দিতে পেরেছিলেন। অথচ কয়েক মাসের মধ্যে ফ্রেশার্সদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করে দেওয়া হয়। যে সংখ্যাটা ৭০০-র নীচে হবে না বলে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মচারীদের ইউনিয়নের তরফে দাবি করা হয়েছে।
মোবাইল নিয়েও ঢুকতে দেওয়া হয়নি, উঠল অভিযোগ
সেইসঙ্গে নিটসের তরফে দাবি করা হয়েছে, ওই কর্মচারীদের ইনফোসিসের মাইসুরু ক্যাম্পাসের মিটিং রুমে ডেকে পারস্পরিক সহমতের ভিত্তিতে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হয়। সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মচারীদের ইউনিয়নের তরফে দাবি করা হয়েছে যে সেইসময় ভয় দেখানোর কৌশলও ব্যবহার করেছিল ইনফোসিস। কর্মচারীদের ভয় দেখাতে বাউন্সার এবং নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করে রাখা হয়েছিল। কর্মচারীদের মোবাইল ফোন নিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি। সেই পরিস্থিতিতে ওই ঘটনার ভিডিয়ো তুলে রাখার বা সাহায্য চাওয়ার সুযোগটুকুও পাননি।
দু'দশক ধরেই এভাবে চলছে, দাবি ইনফোসিসের
যদিও কোনওরকম বেআইনি কাজ করা হয়নি বলে ইনফোসিসের তরফে দাবি করা হয়েছে। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ইনফোসিসে যখন কর্মচারীদের নিয়োগ করা হয়, তখন মাইসুরু ক্যাম্পাসে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ হয়। তারপর 'পরীক্ষায়' বসতে হয় তাঁদের। পাশও করতে হয় সেই 'পরীক্ষায়'। তাতে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য তিনটি সুযোগ মেলে। কিন্তু সেই 'পরীক্ষায়' সফল না হলে ইনফোসিসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হয়।
ইনফোসিসের তরফে দাবি করা হয়েছে, ওই বিষয়টি স্পষ্টভাবে চাকরির চুক্তিতেও উল্লেখ করা থাকে। আর শুধু এখন যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে, তা দু'দশকের বেশি সময় ধরে চলছে। আর সেই কাজটা করা হয়, যাতে ইনফোসিসের সঙ্গে যুক্ত ক্লায়েন্টরা সেরা পরিষেবা পেয়ে থাকেন।