মাস্ক, গ্লাভস, হেড ক্যাপ, ফেস শিলড, হ্যান্ড স্যানিটাইজার। তৈরি করোনারোধী কবচ। সাবধানী লোকজন বাড়িতে মোটামুটি এসবের ঢালাও ব্যবস্থা করে ফেলেছেন। আর এরই মধ্যে, একটু দেরি করে হলেও, ঢুকে পড়েছে পাল্স অক্সিমিটার। বাজারে, অনলাইনে ৫০০ থেকে ৫০০০ বা তারও ওপরে বিভিন্ন দামে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের অক্সিমিটার বিকোচ্ছে।
পাল্স অক্সিমিটারের নির্দিষ্ট স্থানে তর্জনী রাখলেই রক্তে কতটা অক্সিজেন রয়েছে তা দেখিয়ে দেয় ডিজিটাল স্ক্রিন। রক্তে অক্সিজেনের স্বাভাবিক পরিমাণ হল ৯৫ থেকে ১০০%। করোনা আক্রান্তদের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ ৯০% বা তার নীচে চলে গেলেই মুশকিল। দ্রুত ভর্তি হতে হবে হাসপাতালে। করোনা আক্রান্ত নয়, এমন লোকজনও, রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ ৯০ শতাংশের কম হয়ে গেলেই প্রাণভয় পাচ্ছেন।
ইতিমধ্যে সাবধানী–অসাবধানী বহু মানুষ কিনে ফেলেছেন অক্সিমিটার। আর এই বিপুল চাহিদার সুযোগ নিয়েই শুরু হয়েছে জালিয়াতি। বাজারে তো কিছু জালি অক্সিমিটার এসেছেই। কিন্তু এর পাশাপাশি এবার জালি অক্সিমিটার অ্যাপ তৈরি করে ফেলেছে কিছু সাইবার–দুষ্কৃতী। আর তাতে পা দিলেই আপনার সর্বস্ব, এমনকী ব্যাঙ্কে গচ্ছিত অর্থরাশিও শূন্য হয়ে যেতে পারে। এমনই দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সিআইডি–র গোয়েন্দারা।
তাঁরা জানিয়েছেন, ওই নকল অক্সিমিটার অ্যাপ ইনস্টল করলে মোবাইলে থাকা তথ্য, ছবি সব পাচার হয়ে যেতে পারে দুষ্কৃতীদের হাতে। গুগল প্লে স্টোরেই এমন বেশ কয়েকটি অ্যাপ আছে। রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ জানাতে পারবে বল দাবি করলেও কাজের বেলায় লবডঙ্কা। এ ধরনের বেশিরভাগ অ্যাপই প্রথমে আঙুলের ছাপ স্ক্যান করতে চায়, আর সেটা করলেই ফোনের সমস্ত সুরক্ষিত তথ্য, ছবি, নাম–নম্বর চলে যায় সাইবার–দুষ্কৃতীদের হাতে। এভাবে গুগল পে, ফেনপে–র মতো অনলাইন পেমেন্ট অ্যাপগুলিতেও প্রবেশ করতে পারে তারা। এ ধরনের অ্যাপ থেকে যে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ডের মেসেজ আসে সেগুলিও বিপজ্জনক হতে পারে।
এডিজি (সিআইডি) এস এন গুপ্ত জানিয়েছেন, যদিও আমরা এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগ পাইনি। কিন্তু আঙুলের ছাপ অনুকরণ করা খুব শক্ত কাজ। তাই এ ধরণের অপরাধের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তা ছাড়া অন্যান্য সংস্থাও এ ব্যাপারে আমাদের সাবধান করেছে। এই অ্যাপ–জালিয়াতির ব্যাপারে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে রবিবার একটি টুইটও করেছে রাজ্য সিআইডি।