কেরল বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে কংগ্রেস এখন কাঁটা পথের উপর দিয়েই হাঁটছে। সেখানে একের পর এক উইকেট পতন চাপে ফেলেছে কংগ্রেস হাইকমান্ডকে। এই পরিস্থিতিতে বিধায়ক পদের টিকিট নিয়ে যাতে দলাদলি না হয় তার জন্য সতর্ক করেছিল কংগ্রেস হাইকমান্ড। কিন্তু তারপরেও জানা গিয়েছে, টিকিট নিয়ে দলাদলির জন্যই প্রার্থী তালিকা পিছিয়ে গিয়েছে। আগামী ৬ এপ্রিল এখানে নির্বাচন। সেখানে এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় যথেষ্ট উদ্বেগ দেখা দিয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বের।
দলীয় সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই কেরল কংগ্রেসের নেতারা দিল্লিতে গিয়ে দরবার করতে শুরু করেছেন। কিন্তু আলোচনা সব অসম্পূর্ণই থেকে যাচ্ছে। কারণ দলত্যাগ করা শীর্ষ নেতা পিসি চাকো দলের অভ্যন্তরের বিতণ্ডা প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছিলেন। এই বিষয়ে দিল্লি যে রিপোর্ট পেয়েছে তাতে তাঁরা অসন্তুষ্ট এবং পরামর্শ দিয়েছে নেতাদের যে, বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে যাতে শুক্রবার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা যায়।
জানা গিয়েছে, কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পুরনো মুখ বদলাতে চাইছে। আর সামনে নিয়ে আসতে চাইছে মহিলা ও যুবদের। কেরল বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট বিতরণ নিয়েও চাকো অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিলেন। অভিযোগ করেছিলেন যে, টিকিট বিতরণের জন্য কোনও নিয়ম মানা হয়নি। এবার কেরল কংগ্রেসের নেতারা শীর্ষ নেতৃত্বকে বলেছেন, প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে পৃথক পৃথক সমর্থনকারীর নাম দেওয়া হয়েছে এবং সেখান থেকে কেউ সরতে রাজি নয়। তার জেরেই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে দেরী হয়েছে। এই নিয়ে এখন শোরগোল চরমে উঠেছে।
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারি মাসেই কেরল সফরে গিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। কিন্তু রাহুল দিল্লি ফিরতেই ভাঙন শুরু হয়েছিল কেরল কংগ্রেসে। কেরল প্রদেশ কংগ্রেসে বড় ফাটল দেখা দিয়েছিল খোদ রাহুল গান্ধীর লোকসভা কেন্দ্র ওয়াইনাডে। ওই জেলার প্রায় চারজন কংগ্রেস নেতা দলের প্রাথমিক সদস্যপদ ছাড়েন। ভোটমুখী দক্ষিণের এই রাজ্যে নেতৃত্বের বিবাদে বেশ ব্যাকফুটে কংগ্রেসের হাইকমান্ড। যারা দল ছেড়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কেরল প্রদেশ কংগ্রেসের সচিব এম বিশ্বনাথন, ওয়াইনাড জেলা কমিটির সচিব অনিল কুমার, কেরল প্রদেশ কমিটির কার্যকরী কমিটির সদস্য কেকে বিশ্বনাথ এবং কেরল মহিলা কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক সুজয়া বেনুগোপাল।
পিসি চাকোর তোলা অভিযোগ, দুই গোষ্ঠীর জন্য সমস্যা তৈরি হয়েছে তা এদিন অনেকে মেনে নিয়েছেন। কেরল কংগ্রেস দল নয় দুটি গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। সেই সঙ্গে কেরল কংগ্রেস নেতা ওমেন চান্ডি এবং রমেশ চেন্নিথালার দিকেও অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন তিনি। দলে কোনও গণতন্ত্র নেই। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রাক্তন এআইসিসি সচিব এবং বিধায়ক পিসি বিষ্ণুনাথ বলেন, ‘এটা ঘটনা যে দলের মধ্যে তিন দশক ধরে পৃথক গোষ্ঠী রয়েছে। তবে তা দলের উর্ধ্বে নয়। একেক জন নেতার জনপ্রিয়তা একেকরকম। আর তাঁদের কাজের পদ্ধতিও আলাদা। এতে অনেক কর্মী–সমর্থকরা আকৃষ্ট হয়ে পড়েন।’