বাংলাদেশে এখন অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রোজই হিন্দুদের উপর আক্রমণ নেমে আসছে বলে অভিযোগ। তার মধ্যে অবৈধ অনুপ্রবেশ বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে পালিয়ে আসছে নাগরিকরা বলে খবর। ধরা পড়ছে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি নাগরিক। এই আবহে জঙ্গিরাও ঢুকে পড়েছিল। তাদের ধরা গিয়েছে। গতকাল তাই দুই দেশের সেনা বাহিনীর মধ্যে বৈঠকও হয়। যাতে সমন্বয় বজায় রেখে দু’দেশের সীমান্তে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায়। এই আবহে এবার পেট্রাপোল সীমান্তে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান ঘিরে তুমুল অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এখন সার্বিক পরিস্থিতি বিচার করে সীমান্তে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান নিয়ে দু’দেশের মধ্যে কোনও আলোচনা হয়নি। ছয়ঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতি এবং বনগাঁ পুরসভা প্রত্যেক বছর ২১ ফেব্রুয়ারি পেট্রাপোল সীমান্তে বেশ বড় করে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান পালিত হয়। আবার বেনাপোল সীমান্তেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দিনটি পালিত হয় মর্যাদার সঙ্গে। দুই দেশের মধ্যে তখন এক সুন্দর সম্পর্ক দেখা যায়। জিরো পয়েন্টে শহিদ বেদিতে মাল্যদান করেন দুই দেশের নাগরিকরা। এখন বেনাপোলে ভাষা দিবস পালিত হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহের মেঘ দানা বেঁধেছে। তবে এপারে প্রত্যেকবারের মতো ভাষা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতি এবং ছয়ঘরিয়া পঞ্চায়েত। পৃথকভাবে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাবে বনগাঁ পুরসভা বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: সাতসকালেই নৈহাটি লোকালে আগুন, শিয়ালদা স্টেশনে তুমুল আতঙ্কে যাত্রীদের দৌড়
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি শোনা যাবে। কিন্তু বাংলাদেশ এবার কতটা পালন করবে সেটা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষই। আগে বারবার দেখা গিয়েছে ভাষা দিবসে দুই বাংলার মিলন। ওইদিন ক্ষণিকের জন্য খুলে দেওয়া হতো দু’দেশের দ্বার। দুই বাংলার মানুষকে দেখা যেত শুভেচ্ছা বিনিময় করতে। এবার তা হবে কিনা সেটা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। একটা মঞ্চ ভারত–বাংলাদেশের অতিথিরা উপস্থিত থাকতেন। ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে সেই ছবি হয়তো আর দেখা যাবে না। মহম্মদ ইউনুসের সরকারের আমল থেকেই ভাষা দিবসের জৌলুস কমতে শুরু করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই বছর থেকে অনেক কিছুই হারিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা দুই বাংলার মানুষের মধ্যে।
যদিও বনগাঁ শহরে অমর একুশে পালন করবে। বনগাঁ পুরসভা ভাষা দিবস উপলক্ষ্যে একাধিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। ভাষা শহিদ বেদিতে সেদিন শ্রদ্ধা জানানো হবে। চলবে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিতে ঐতিহাসিক গান। যা শুনতে কান অভ্যস্ত। তাই তো বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ বলেন, ‘সীমান্তে এখন কোনও অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয় ঠিকই। তবে আমরা ওইদিন ভাষা দিবস পালন করব।’ কিন্তু বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তো সীমান্তে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান নিয়ে কোনও আলোচনা এখনও হয়নি। হাতে তো সময় বলতে আর ৯দিন। এখনও কোনও প্রস্তাব আসেনি। তাই এককভাবেই তা পালন করবে এপার বাংলা।