ডমিনিকান প্রজাতন্ত্রে ঘুরতে গিয়ে নিখোঁজ ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুদীক্ষা কোনাঙ্কির এখনও কোনও সন্ধান মেলেনি না। এবার তাঁর খোঁজে ইন্টারপোল আন্তর্জাতিক সতর্কতা জারি করেছে। ইন্টারপোলের নোটিস বলা হয়েছে, ২০ বছর বয়সি সুদীক্ষা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। বন্ধুদের সঙ্গে ছুটি কাটাতে সুদীক্ষা ডমিনিকান রিপাবলিকের পুন্তা কানায় ঘুরতে গিয়েছিলেন। শেষবার তাঁকে গত ৬ মার্চ সকালে একটি বিচে দেখা গিয়েছিল। ওই তরুণী ১.৬ মিটার লম্বা এবং তার ডান কানে তিনটি ফুটো রয়েছে। তাঁর চুলের রং কালো এবং চোখের রং বাদামি রঙের। ওই দ্বীপে জোশুয়া রিবে নামে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল তাঁর। শেষ ভিডিওতে রিবের সঙ্গে দেখা গিয়েছে সুদীক্ষাকে। কয়েক ঘণ্টা পর রিবে একা ফিরে আসেন।সুদীক্ষার খোঁজে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন বা ইন্টারপোল হলুদ নোটিস জারি করেছে। (আরও পড়ুন: বিস্ফোরণে নিহত নিষিদ্ধ লস্কর-ই-ইসলাম প্রতিষ্ঠাতা, যেন ‘দুঃখে ভাসছে’ খাইবার সরকার)
অন্যদিকে পুলিশ জানিয়েছে, জোশুয়া রিবেকে ২৪ ঘন্টা নজরদারিতে রাখা হয়েছে।আগে তিন বার নিজের বক্তব্য বদলালেও তদন্তে সহযোগিতা করছিলেন বলে তাঁকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়নি বলে জানিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তাঁর নতুন বক্তব্য নিয়ে উঠে এসেছে বেশ কিছু প্রশ্ন এবং তার মধ্যে জোশুয়া বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন না বলেও দাবি পুলিশের।জোশুয়া বলেন, ‘আমরা কোমর–ডোবা জলে নেমে গিয়েছিলাম। কথা বলছিলাম, চুমুও খেয়েছিলাম... তারপর একটা বড় ঢেউ এসে আমাদের ধাক্কা দিয়ে খানিকটা টেনে নিয়ে যায়। আমরা কোনও মতে ভেসে উঠে সাহায্য চাওয়ার চেষ্টা করি। আগে লাইফগার্ডের কাজ করেছি। ওকে টেনে জল থেকে তুলে আনি। কিন্তু তাতে অনেকটা সময় লাগে। শ্বাস নিতে পারছিলাম না, অনেকটা জল খেয়ে ফেলেছিলাম। বেশ কয়েক বার জ্ঞান হারানোর পরিস্থিতিও হয়েছিল।’ (আরও পড়ুন: 'ভারত-চট্টগ্রাম ভাগের ছক কষা হচ্ছে', বিস্ফোরক দাবি বাংলাদেশি সাংবাদিকের)
তিনি আরও জানান, 'হাঁটুজল থাকা অবস্থায় পায়ের তলায় মাটি পেয়ে তিনি সুদীক্ষাকে ছেড়ে দেন এবং সুদীক্ষা একটা নির্দিষ্ট দিকে হাঁটতে শুরু করেন। শেষবার ওকে দেখার সময়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ও ঠিক আছে কিনা, কিন্তু পেটে ঢুকে যাওয়া নোনাজল বমি করতে শুরু করি বলে ওর উত্তর শুনতে পাইনি। বমি করা হয়ে যেতে ওকে কোথাও না দেখতে পেয়ে ভেবেছিলাম নিজের জিনিসপত্র নিয়ে ও চলে গিয়েছে। আমার খুব ক্লান্ত লাগছিল বলে সৈকতেরই এক চেয়ারে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। রোদ আর মশার কামড়ে ঘুম ভাঙতে আমার বন্ধুর ঘরে গিয়ে নিজের ফোনটা নিই, তারপরে আমার ঘরে গিয়ে ফের ঘুুমিয়ে পড়ি।’
আরও পড়ুন: 'আল্লাহর ইচ্ছাতেই গুলি খেয়ে মরেছে আবু কাতাল... আলহামদুলিল্লাহ!'
সুদীক্ষা সাঁতার জানতেন কিনা, সুদীক্ষা অন্তর্ধানের ব্যাপারে তাঁর কী ধারণা, সুদীক্ষা হারিয়ে যাওয়ার পরে তিনি তাঁর বন্ধুদের কী বলেছিলেন, এই ধরনের প্রশ্ন করা হতে তার জবাব দেননি জোশুয়া। যুক্তি, তাঁর আইনজীবী নাকি এই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে বারণ করেছেন। ফলে, জোশুয়ার উপরে পুলিশের সন্দেহ বাড়ছে। এদিকে জোশুয়ার বাবা–মায়ের দাবি, সুদীক্ষা হারিয়ে যাওয়ার পর থেকে যে হোটেলে তিনি থাকছিলেন, সেখানেই তাঁকে নজরদারিতে রেখেছে পুলিশ। তাঁকে বারবার থানায় ডেকে দীর্ঘক্ষণ ধরে জেরাও করা হয়েছে।অন্যদিকে ওই ছাত্রীর পরিবার জানিয়েছে, সুদীক্ষা সব সময় নিজের কাছে ফোন রাখতেন। কিন্তু নিখোঁজ হওয়ার দিন বন্ধুদের কাছে ফোন এবং টাকার ব্যাগ রেখে যান। সুদীক্ষার সঙ্গীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কোনও সূত্র পাওয়া যায় কিনা তার চেষ্টা করছে পুলিশ।