লিবিয়া-ভিত্তিক ভারতীয় ইসলামিক স্টেটের সন্ত্রাসবাদী মহম্মদ শোয়েব খানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করেছে। শোয়েবের বাড়ি মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভাজি নগরে (পূর্বতন ঔরঙ্গাবাদ)। আইএসআইএস মডিউল মামলায় শোয়েবকে খুঁজছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। উল্লেখ্য, ইন্টারপোল রেড নোটিশ হল বিশ্বব্যাপী গ্রেফতারি পরোয়ানা। ইন্টারপোলের সদস্য দেশগুলিতে সন্দেহভাজনদের খুঁজে বের করতে এবং সাময়িক ভাবে সংশ্লিষ্ট গ্রেফতারির এক্তিয়ার দেয় এই নোটিশ। এরপরে ধৃতদের বিরুদ্ধে প্রত্যর্পণের আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যায়। (আরও পড়ুন: জারি কারফু-নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশি পাচারকারীদের ভাতে মারতে কড়া পদক্ষেপ সীমান্তে)
আরও পড়ুন: 'ভারতকে ২১ মিলিয়ন ডলার কেন দিচ্ছে আমেরিকা?' এবার মুখ খুললেন ট্রাম্প
এনআইএ-র দাবি, ৫০ বছর বয়সি শোয়েব খান ঔরঙ্গাবাদ এলাকা থেকে আইএস-এর জন্য তরুণদের ভর্তি করার চেষ্টা করছিল। এর জন্য সে আরও একজন অভিযুক্ত মহম্মদ জোহেব খানের সাথে মিলে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছিল। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থাটি জোহেব খানকে গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু সেই সময় শোয়েব ভারত থেকে পালিয়ে যায়। এরপর ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংস্থাটি দু'জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র বা চার্জশিট দাখিল করে। সেই সময় জারি করা এক বিবৃতিতে এনআইএ বলেছিল, শোয়েব খান লিবিয়ায় অবস্থান করছে এবং আইএসআইএসের ভারতবিরোধী কর্মসূচি প্রচারের ষড়যন্ত্রে জড়িত সে। (আরও পড়ুন: ছাত্রদল বনাম বৈষম্য বিরোধীদের সংঘর্ষে জখম শতাধিক; নামল সেনা, BGB, নৌসেনা, ব়্যাব)
এনআইএ-র বিবৃতিতে বলা হয়, 'শোয়েব এবং জোহেব ভারত জুড়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য তরুণদের আইএসআইএস সংগঠনে ভর্তি করার ষড়যন্ত্র করেছিল। এই মামলার তদন্তে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ উন্মোচিত হয়েছে। তদন্ত চলাকালীন আইএসআইএস-এর কিছু বিদেশি হ্যান্ডেল চিহ্নিত করা গিয়েছে এই ক্ষেত্রে।' (আরও পড়ুন: ভারতে খোঁজ মিলল 'সোরোসের এজেন্টের'! $২১ মিলিয়ন নিয়ে বিতর্কের মাঝে সামনে নয়া দাবি)
এদিকে শোয়েবের নামে জারি হওয়া ইন্টারপোলের নোটিশে বলা হয়েছে, শোয়েব খানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাসী কার্জকলাপ, ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাসী কাজ করার চেষ্টা বা প্রচার, সন্ত্রাসী কাজের জন্য লোক ভর্তি করা, সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য হওয়া এবং সন্ত্রাসী সংগঠনকে সমর্থন করার অভিযোগ রয়েছে। (আরও পড়ুন: বিশ্ব নাটেলা দিবসের ১০ দিনের মাথায় প্রয়াত ‘নাটেলার জনক’ ফ্রান্সেসকো রিভেলা)
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ‘এর আগে সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থার তদন্তে দুই অভিযুক্তের ভারতবিরোধী কর্মকাণ্ডের জাল উন্মোচিত হয়েছিল। ভারতে আইএসআইএস নেটওয়ার্কের মডিউলগুলিকে ধ্বংস করার জন্য অক্লান্তভাবে কাজ করে আসছে এনআইএ। তারা তদন্তে দেখতে পায়, এই দুই ব্যক্তি আইএসআইএসের স্বঘোষিত খলিফার প্রতি ‘বাইয়াত’ (নিরঙ্কুশ আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি) দিয়েছিল। অভিযুক্তরা ভারতে একাধিক সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পর আফগানিস্তান বা তুরস্কে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। তারা আইএসআইএস-এর চরমপন্থী ও সহিংস আদর্শ প্রচারের জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরিতেও সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল। তারা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে তরুণদের আইএসআইএসের দলে আকর্ষণ করার পরিকল্পনা করেছিল।’
রেড নোটিশে আরও যোগ করা হয়, ‘তদন্তে আরও উদ্ঘাটন হয়েছে যে, মহম্মদ শোয়েব খান এবং জোহেব খান একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে জঙ্গি ভর্তির চেষ্টা চালাচ্ছিল। তারা ঔরঙ্গাবাদ এলাকার ৫০ জনের বেশি তরুণকে সেই গ্রুপে যোগ করেছিল। ভারতে আইএসআইএস-এর কর্মকাণ্ড বাড়ানোর জন্য এবং সেই সব তরুণদের কট্টরপন্থী করে তোলার জন্য এই গ্রুপ তৈরি করা হয়েছিল। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল এই সব তরুণদের জঙ্গি সংগঠনে ভর্তি করা। অভিযুক্তরা বিস্ফোরক তৈরির এবং আইইডি তৈরির সাথে সম্পর্কিত ভিডিও শেয়ার করত এই গ্রুপে। তারা একটি বিস্তারিত কর্ম পরিকল্পনাও প্রস্তুত করেছিল। যার মধ্যে ভারতের একাধিক স্থানে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা, প্রস্তুতি এবং বাস্তবায়ন এবং হামলার পর নেওয়া পদক্ষেপের নীলনকশা তৈরি ছিল।’