এবার থেকে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ বা সম্পত্তির ক্ষেত্রেও নোটিশ জারি করতে পারবে ইন্টারপোল। এতদিন পলাতক আসামি, হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তি, বা কোনও ব্যক্তি সংক্রান্ত তথ্যের ক্ষেত্রেই নোটিশ ইস্যু করা যেত ইন্টারপোলের মাধ্যমে। তবে এবার থেকে ভিনদেশে পাচার হওয়া সম্পত্তির ক্ষেত্রে ইন্টারপোলের মাধ্যমে জারি করা যাবে 'সিলভার নোটিশ'। সম্প্রতি ইন্টারপোলের ইতিহাসে প্রথম 'সিলভার নোটিশ' ইস্যু করা হয়েছে। আপাতত এই 'সিলভার নোটিশ' ইস্যু করার বিষয়টি পাইলট প্রোজেক্ট হিসেবে পরিচালনা করা হচ্ছে। ভারত সহ ৫২টি দেশ এই প্রকল্পে হাত মিলিয়েছে ইন্টারপোলের সাথে। উল্লেখ্য, নীরব মোদী, বিজয় মালিয়া, মেহুল চোক্সিদের মত বহু ভারতীয় আছেন যারা আর্থিক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত এবং তারা ভিনদেশে পালিয়ে আছেন। (আরও পড়ুন: ২০০৫-এ যখন আমেরিকা আমার ভিসার আবেদন নাকচ করে... পডকাস্টে অকপট মোদী)
আরও পড়ুন: যত দোষ বাইডেনের... ট্রাম্প গদিতে বসার আগেই বিস্ফোরক মেটা প্রধান জুকারবার্গের
এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, ইতালির অনুরোধে ইন্টারপোলের তরফ থেকে প্রথম 'সিলভার নোটিশ' জারি করা হয়। এই সিলভার নোটিশের মাধ্যমে একটি সদস্য দেশ অপর দেশের কাছে কোনও একটি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অনুরোধ জানাতে পারে। তবে এই সংক্রান্ত প্রতিটি আবেদন পর্যালোচনা করবে ইন্টারপোলের সাধারণ সচিবালয়। এই নোটিশ যাতে রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করা না হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা থাকবে। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই বছর নভেম্বর পর্যন্ত এই সিলভার নোটিশ পাইলট প্রোজেক্ট হিসেবে চালু থাকবে। সদস্য দেশগুলি সব মিলিয়ে মোট ৫০০টি সিলভার নোটিশ জারি করার সুযোগ পাবে। ভিনদেশে থাকা অপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতেই এই নোটিশ ব্যবহার করা যাবে। (আরও পড়ুন: পরপর প্রচেষ্টায় বিফল, মহাশূন্যে আদৌ 'মিলন' হবে ২ স্যাটেলাইটের? ISRO বলল...)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে পালাবদলের নেপথ্যে আমেরিকা ছিল বলে মনে করে ভারত? জবাব দিলেন মার্কিন NSA
এদিকে গত ৭ জানুয়ারি ভারতে চালু হল 'ভারতপোল'। প্রসঙ্গত, ভারতে ইন্টারপোল সংক্রান্ত যাবতীয় তদন্ত এবং তথ্যের 'লিঙ্ক' হল সিবিআই। ইন্টারপোলের মাধ্যমে অন্য সদস্য দেশের তদন্তকারী সংস্থার থেকে ভারত তদন্তের স্বার্থে তথ্য চাইতে পার একমাত্র সিবিআইয়ের মাধ্যমে। এর পাশাপাশি অন্য দেশকে সাহায্য করতে ইন্টারপোলের মাধ্যমেই তথ্য সরবরাহ করতে পারে সিবিআই। এই আবহে কোনও রাজ্যের পুলিশের যদি ইন্টারপোলের সাহায্যের দরকার পরত, তাহলে তাদের সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হতে হত। কোনও মামলার অভিযুক্ত যদি বিদেশে পালিয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে 'রেড কর্নার' নোটিশ জারির জন্যেও সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হতে হত। এমনকী ইন্টারপোলের থেকে ইয়েলো নোটিশ (হারিয়ে যাওয়া মানুষের জন্য), ব্লু নোটিশ (কোনও এক ব্যক্তির কার্যকলাপ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য) জারির জন্যেও সেই রাজ্য পুলিশের ডিপার্টমেন্টকে আগে সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হতে হত। তারপর সিবিআই সেই রাজ্যের পুলিশ ডিপার্টমেন্টের সেই আবেদন ইন্টারপোলের কাছে জমা করত। এভাবে সিবিআইয়ের মাধ্যমে ইন্টারপোলের থেকে কোনও এক পলাকত অভিযুক্তের তথ্য চাইতে বা তাকে নিয়ে নোটিশ জারি করতে বলার এই প্রক্রিয়া রাজ্যগুলির জন্য সময়সাপেক্ষ হয়ে যাচ্ছিল। তাই সেই জটিলতা কাটাতে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের ভাবনা সামনে এসেছিল। সেই মতোই 'ভারতপোল' পোর্টাল তৈরি হয়েছে। (আরও পড়ুন: ২ বছর ধরে লাগাতার ধর্ষণের শিকার ক্রীড়াবিদ, কোচ সহ ৬০ জন জড়িত বলে অভিযোগ)
আরও পড়ুন: বছরে ১১০০০০ প্রোমোশন হয়েছে, ক্যাম্পাসিংয়ে নিয়োগ হবে আগের থেকে বেশি: TCS
রিপোর্ট অনুযায়ী, ইন্টারপোল সংক্রান্ত রাজ্য পুলিশ ডিপার্টমেন্টগুলির যত আবেদন আছে, তার জন্যে নির্দিষ্ট একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরির পরিকল্পনা পেশ করা হয়েছিল সিবিআই ডিরেক্টর প্রবীণ সুদের কাছে। সেই মতোই এই 'ভারতপোল' তৈরি হয়েছে। সিবিআই অভ্যন্তরীণ ভাবে এই ভারতপোলের ট্রায়াল চালাচ্ছে। এই আবহে ৭ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই ভারতপোল ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন। এই আবহে সিবিআই এবং রাজ্য পুলিশের মধ্যে যোগাযোগ আরও অনেক দ্রুত হবে। আর ইমেল, ফ্যাক্সের ওপর এটি নির্ভর করবে না। সরাসরি একটি পোর্টালের মাধ্যমেই সব আবেদন এবং যোগাযোগ করা যাবে। এর ফলে প্রয়োজনীয় নোটিশ ইস্যু করার বিষয়টি আরও সহজতর হয়ে যাবে। প্রসঙ্গত, ২০২১ সাল থেকে ইন্টারপোলের সাহায্যে প্রায় ১০০ জন পলাতক অপরাধীকে ভারতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে ২০২৪ সালেই ২৬ জনকে ভিনদেশ থেকে ফেরত আনা হয়েছে ভারতে।