লৌহমানবী। মণিপুরের মুখ। ১৬ বছরের অনশনে চোখে চোখ রেখে রাষ্ট্রের নীতির বিরুদ্ধে লড়াই। আফস্পার( AFSPA) বিরুদ্ধে একটানা আপোষহীন লড়াই। সেই লড়াইয়ের মুখ ছিলেন মণিপুরের ইরম চানু শর্মিলা। তবে সেসব আজ অতীত। অনশন ভঙ্গ করে ২০১৭ সালে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই বিধানসভা ভোটে তিনি মাত্র ৯০টি ভোট পান। আর ইরম শর্মিলার এখন ঠিকানা কর্ণাটক। স্বামী ডেসমন্ড কুটিনহো আর দুই সন্তানকে নিয়ে সেখানেই থাকেন ৪৯ বছর বয়সী ইরম শর্মিলা চানু। এদিকে অসম, মণিপুর ও নাগাল্যান্ডের কিছু এলাকা থেকে Armed forces special powers Act প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তা নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের বিশ্ব কল্যান পুরকায়স্থর সঙ্গে কথা বললেন ইরম শর্মিলা।
প্রশ্ন: আফস্পা আংশিক প্রত্যাহার নিয়ে কি মনে হচ্ছে আপনার?
উত্তর: আমার মতো অ্যাক্টিভিস্টের কাছে এটা খুব সুখের মুহূর্ত। অতীতের তুলনায় বর্তমানে সংসদের থাকা রাজনীতিবিদরা যে একাজ করছেন তাতে খুশি। এই যে ঔপনিবেশিক আইনকে বাতিল তা গণতন্ত্রের একটা ভালো দিক। নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণের জন্য অতিরিক্ত সশস্ত্র বাহিনী রাখতে কোটি কোটি টাকা খরচ করার চেয়ে আমি মনে করি সরকারের উন্নয়ন নিয়ে ভাবা দরকার।
প্রশ্ন: আপনার কি মনে হচ্ছে আফস্পা বাতিল করতে অনেকটা দেরি হয়ে গেল?
উত্তর : এটা আগে করলে ভালো করতেন। তবে এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছি। দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে এই ফল পাচ্ছি আমরা। একটা নতুন দিনের শুরু। এটা প্রথম ধাপ। আমার মতে আফস্পাকে স্থায়ীভাবে বিলোপ করা দরকার।এই আইনের জন্য যাঁরা তাঁদের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন তাঁদের ক্ষতিপূরণও দেওয়া দরকার।
প্রশ্ন : সেই অনশনের দিনগুলো কেমন ছিল বলে মনে হচ্ছে আজ?
উত্তর : প্রতিবাদ শুরুর তিনদিন পরে পুলিশ আমায় গ্রেফতার করেছিল। তারপর শুরু হয়েছিল অত্যাচার। এক ফোঁটা জলও আমি খেতে চাইনি। সরকার জোর করে নাক দিয়ে হাসপাতালে ও জেলে খাওয়ানোর চেষ্টা করত। গোটা বিশ্বে আমায় নিয়ে আলোচনা হত। আমি জানি না উত্তরপূর্বের নতুন প্রজন্ম আমার ওই লড়াইকে, যন্ত্রনাকে অনুভব করেন কি না, কিন্তু একদিন তাঁরা ঠিক বুঝবেন।
প্রশ্ন : আফস্পা যদি উত্তরপূর্ব থেকে পুরোপুরি বিলোপ হয় তবে কী পরিবর্তন হবে?
উত্তর : আফস্পা ছাড়া জীবন আরও স্বাভাবিক ও সুন্দর হবে। কোনও ভয় থাকবে না।