মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরান আলোচনায় বসবে না। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যা ইচ্ছা তা করতে পারেন। এভাবেই মার্কিন প্রেসিডেন্টকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। পরমাণু চুক্তি করতে চেয়ে ইরানকে চিঠি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই নিয়ে ইরান আলোচনায় রাজি না হলে ‘ফল ভালো হবে না’ বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু ট্রাম্পকে পাল্টা ইরানের প্রেসিডেন্ট জানিয়ে দিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চাপে ইরান মাথা নোয়াবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যা পারে করে নিক। (আরও পড়ুন: 'মার্কিন মদে ১৫০% শুল্ক ভারতের', ফের একবার দিল্লিকে নিশানা ওয়াশিংটনের)
পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে চেয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইকে চিঠি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট । শুক্রবার ওই চিঠি দেওয়ার পরে একটি সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তিনি আশাবাদী, ইরান আলোচনার টেবিলে বসবে। এতে ইরানের ভাল হবে।তবে এই প্রস্তাব ইরান মেনে না নিলে তার ফল ভাল হবে না।তেহরানের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে তিনি আন্তরিক বলেই জানান ট্রাম্প। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে বিশ্ব অর্থনীতি থেকে ইরানকে বিচ্ছিন্ন করতে এবং তেল রপ্তানি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে যে ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগ করেছিলেন, তা পুনর্বহালের ইঙ্গিত দিয়েছেন।এরপরেই গত শনিবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই বলেন, তেহরানকে কোন হুমকি দিয়ে আলোচনায় বসানো যাবে না। (আরও পড়ুন: মৃত ৩০, মান বাঁচাতে মিথ্যা বলে পাক সেনা? ট্রেন হাইজ্যাক কাণ্ডে বড় দাবি বালোচদের)
এবার ইরানের প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্পের চাপের কাছে তাঁরা মাথা নত করবেন না। এ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনও ‘দর কষাকষি’ বা ‘সমঝোতা’ করবে না ইরান। মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যে আচরণ করেছে তা খুবই অসম্মানজনক। এটা করো, নইলে আমরা ওটা করবো, এই ধরনের কথা বলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই আদেশ কোনও মতেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ তারপরেই ট্রাম্পের দিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন তিনি। ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুধুমাত্র আদেশ এবং হুমকি দেয়। আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনায় বসব না। আমরা চাপের কাছে মাথা নত করব না। এই ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যা ইচ্ছা তারা তা করতে পারে।’
আরও পড়ুন: ভারত-বাংলাদেশে অনুদান নিয়ে ট্রাম্পের দাবির পর 'গোপন নথি' নষ্টের নির্দেশ USAID-এর
ইরানের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংঘাত দীর্ঘদিনের। এবার ইরানের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করা হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে, ইরান দীর্ঘদিন ধরে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ইচ্ছার কথা অস্বীকার করে আসছে। তবে তারা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ পরিশুদ্ধতার মান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাছাকাছি উল্লেখ করে সতর্ক করেছে আইএইএ। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে ৯০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামের প্রয়োজন হয়।২০১৯ সাল থেকে ইরান তার পারমাণবিক তৎপরতা বাড়িয়েছে। এর এক বছর পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে তেহরানের ২০১৫ সালে হওয়া পারমাণবিক চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। তিনি তখন ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।