ইরাক এবার তাদের বিবাহের আইনে সংশোধনী আনতে চলেছে। আর তাতে যা আছে সেটায় চমকে গিয়েছে গোটা পশ্চিমী দুনিয়া। শুধু তাই নয়, বিদেশের অন্যান্য রাষ্ট্রেও এই নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। এবার ইরাক এই বিবাহের আইন সংশোধন করে পাশ করাতে চায় বলে খবর। যেখানে পুরুষরা কমপক্ষে ৯ বছর বয়সের মেয়েকে বিয়ে করতে পারবে। আর কোনও মহিলার বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার থাকবে না। এমনকী সন্তানের অধিকার এবং উত্তরাধিকার পর্যন্ত দেওয়া হবে না। দ্য টেলিগ্রাফ এই রিপোর্ট করেছে। যা নিয়ে সরব হচ্ছে সে দেশের মহিলা এবং শিশু অধিকার সংগঠনগুলি।
এদিকে এই বিলে নাগরিকদের অধিকার দেওয়া হয়েছে এক্ষেত্রে হয় ধর্মীয় সংগঠন অথবা বিচারব্যবস্থার উপর ভরসা রাখতে হবে পারিবারিক বিষয়ে। এই বিল পাশ করাতে এখন একটা যুক্তি দেখানো হচ্ছে। সেটি হল—অবৈধ সম্পর্কে যাতে মেয়েরা জড়িয়ে না পড়ে তাই এই আইন সংশোধন করা হচ্ছে। এতে মহিলাদের নিরাপত্তা অটুট থাকবে। কিন্তু অন্য একটি পক্ষের মত, এই প্রস্তাব যদি পাশ হয়ে আইনে পরিণত হয় তাহলে দেশে বাল্যবিবাহ কার্যকর হয়ে যাবে। এমনকী বিধবার সংখ্যা বাড়তে শুরু করবে। এটা মহিলাদের সম্পূর্ণ বঞ্চিত করার আইন। তবে দ্বিতীয় সংশোধনী আইন পাশ হয়ে গিয়েছে ১৬ সেপ্টেম্বর।
আরও পড়ুন: আওয়ামি লিগের প্রতিবাদ মিছিল ঘিরে উত্তাল বাংলাদেশ, কর্মীদের উপর হামলা, নামল সেনা
অন্যদিকে ইরাকে ১৯৫৯ সালের ব্যক্তিগত আইনের ১৮৮ নম্বর আইন সংশোধনের দাবি উঠেছে। ইরাকি পরিবারগুলিকে নিয়মের মধ্যে আনতে এই বাড়তি পরিকল্পনা করা হয়েছে। পশ্চিমী দুনিয়ার এই দেশে এমন সংশোধনী আইনকে প্রাসঙ্গিক বলা হচ্ছে। তবে আগের আইনে বিচারক এবং পাত্রপাত্রীর অভিভাবকের সম্মতিতে ১৫ বছর বয়সেও বিয়ে দেওয়ার কথা বলা ছিল। সেটাই এবার কমে ৯ হতে চলেছে। কট্টরপন্থী শিয়া দলগুলি পুরনো আইনের সংশোধন চাইছে। খসড়া বিলে বলা হয়েছে, দম্পতির মধ্যে মতানৈক্য হলে স্বামীর মতামতই মেনে নিতে হবে স্ত্রীকে। আদালতের পরিবর্তে স্বামী–স্ত্রীর বচসা নিয়ে শেষ কথা বলবে শিয়া ও সুন্নি ধর্মের দফতর।
এছাড়া ইউনিসেফ একটি তথ্য পেশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, বিয়ের বয়সের একটা উচ্চতর মান ইরাক ছাড়া সব দেশেই রয়েছে। ইরাকি মেয়েদের মধ্যে ২৮ শতাংশের বিয়ে ১৮ বছর বয়সে হয়ে যায়। আর প্রস্তাবিত সংশোধনী আইন পাশ হলে সেটা সবচেয়ে খারাপ হবে। আর বিলে আরও বলা হয়েছে, ‘জাফারি আইন’ মেনে শিয়া আচরণবিধি তৈরি করতে হবে। ষষ্ঠ শিয়া ইমাম জাফর আল সাদিক বিয়ে, বিচ্ছেদ, দত্তক, উত্তরাধিকার নিয়ে যা বলেছেন সেটা মেনে চলতে হবে। ‘জাফারি আইন’ অনুযায়ী মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর। ছেলেদের বিয়ের বয়স ১৫ বছর।