করোনাভাইরাসের ভারতীয় স্ট্রেনের বিরুদ্ধে কি টিকা, ওষুধ কার্যকরী নয়? ভারতের করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেই একটি মহলে তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) তরফে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হল, বি.১.৬১৭ ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে টিকা, ওষুধ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি কার্যকর।
ভারতে বিশ্বের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক রোডেরিকো এইচ অফরিন বলেন, ‘এই ভ্যারিয়েন্টের চিহ্নিতকরণের হার বাড়ছে। সেইসঙ্গে ভারতের একাংশে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তবে ভারতে লাগাতার সংক্রমণ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে এই ভ্যারিয়েন্টের ভূমিকা ঠিক কতটা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।’
সোমবার টেকনিকাল লিড মারিয়া ভ্যান কেরখোভ জানিয়েছিলেন, ভারতে যে প্রজাতির (বি.১.৬১৭) করোনা পরিলক্ষিত হচ্ছে, সারা বিশ্বের কাছে উদ্বেগের বিষয়। প্রাথমিক গবেষণা অনুযায়ী, সেই ভ্যারিয়েন্ট আরও বেশি সংক্রামক। মারিয়া বলেছিলেন, 'আন্তর্জাতিক স্তরে এই ভ্যারিয়েন্টকে উদ্বেগজনক হিসেবে চিহ্নিত করছি আমরা। আমাদের হাতে এমন কিছু তথ্য আছে, যা থেকে অনুমান করা হচ্ছে যে এই ভ্যারিয়েন্ট আরও বেশি সংক্রামক।' তিনি জানিয়েছেন, সেই বিষয়ে মঙ্গলবার আরও তথ্য প্রদান করা হবে। একইসঙ্গে সেই বি.১.৬১৭ ভ্যারিয়েন্টের আরও তিনটি উপ-প্রজাতির বিষয়েও তথ্য দেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তিনি বলেন, 'প্রাথমিক কয়েকটি গবেষণায় এই ভ্যারিয়েন্ট আরও বেশি সংক্রামক বলে জানানো হলেও এই প্রজাতি, সমস্ত উপ-প্রজাতি নিয়ে আমাদের আরও তথ্যের প্রয়োজন আছে।'
গত বছর অক্টোবরে ভারতে প্রথম বি.১.৬১৭ ভ্যারিয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছিল। যে ভ্যারিয়েন্টকে ভারতে দ্বিতীয় দফায় করোনার বাড়বাড়ন্তের জন্য দায়ী করা হয়। এবার সেই ভ্যারিয়েন্টকে 'বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের' বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার আগে ব্রিটেন, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ব্রাজিলের ভ্যারিয়েন্টকে একইরকম তকমা দিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
তারইমধ্যে একটি সংবাদমাধ্যমে ভারতের দুটি করোনা টিকা (কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন) নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন জানিয়ে দেন, নয়া ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ওই দুই টিকা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে কিনা, সেই সংক্রান্ত পর্যাপ্ত তথ্য এখনও নেই। তবে টিকা নেওয়া থাকলে রোগের প্রকোপ কমে যায়। ঝুঁকি হ্রাস পায়। তাই টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী।