দেশে দেশে Covid-19 সংক্রমণের হারে তারতম্য দেখা দিলেও সব জায়গাতেই তা তুঙ্গে পৌঁছনোর পরে স্থিতিশীল হতে দেখা যাচ্ছে। চিন থেকে শুরু করে হালে ইউরোপে Covid-19 কার্ভে ধরা পড়ছে একই ছবি।
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বিশ্বের যে সমস্ত দেশে করোনা সংক্রমণ মহামরীর আকার ধারণ করেছিল, সেই সমস্ত রাষ্ট্রে এখন কার্ভ প্রায় সমান হয়ে এসেছে।
কী এই Covid-19 কার্ভ? জন্স হপকিন্স বিশ্বিদ্যালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, একদিন থেকে পরের দিন নতুন সংক্রমণের সংখ্যার উপরে নির্ভর করে কার্ভের ওঠানামা। সংক্রমণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছলে কার্ভের রেখা চড়াইতে ওঠে, কমলে নিম্নমুখী হয়। প্রতিদিনের হিসেবে সংক্রমণের হার যত কমে আসে, চড়াই-উৎরাই কমার ফলে রেখাও তত সমান হতে থাকে।
গত মার্চ মাসে চিন ঘোষণা করে যে, তার করোনাভাইরাস সংক্রমণের তুঙ্গ অবস্থান কেটে গিয়েছে। প্রায় মাসখানেক সে দেশে আক্রান্ততের সংখ্যা ৮২,০০০ ছাড়িয়ে যায়নি। মৃতের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়েনি। অর্থাৎ নতুন রোগীর সংখ্যা না বাড়ার ফলে চিনের Covid-19 কার্ভ প্রায় সমান হতে থাকে।
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মানচিত্রে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত ১০টি দেশের গত ৫ দিনের Covid-19 কার্ভ সম্প্রতি সমান হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কোন নির্দিষ্ট দিনের গণনায় সেই দিনের গড় আক্রান্ত, তার ২ দিন আগের গড় আক্রান্ত এবং পরের দুই দিনের গড় আক্রান্তের হিসেব বিচার করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বলছে, দশটির মধ্যে ৬টি সর্বোচ্চ Covid-19 আক্রান্ত দেশে নতুন রোগীর সংখ্যা সম্প্রতি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। তালিকায় রয়েছে ইতালি, স্পেন, আমেরিকা, ইরান, নেদারল্যান্ডস ও জার্মানি। সমীক্ষা বলছে, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও বেলজিয়ামে এখনও উচ্চহারে সংক্রমণ ঘটলেও আগের তুলনায় তা কম। একই অবস্থা আমেরিকারও। এই কারণে এই দেশগুলিতে কিছু দিনের মধ্যে Covid-19 কার্ভ সমান হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
তবে কার্ভ সমান হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশে, যেখানে গত কয়েক দিনে সংক্রমণের হার বাড়ার ফলে কার্ভ উর্ধমুখীই রয়েছে।
ভারতে এখনও সংক্রমণের হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছয়নি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, সংক্রমণ অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ স্থানে পৌঁছলে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেবে এবং তারপরেই Covid-19 কার্ভ সমান হওয়ার পর্ব আসবে। তত দিন পর্যন্ত আশঙ্কার প্রহর গোনা ছাড়া উপায় নেই।