ফের বিচার ব্যবস্থার উপর চাপ বাড়ানোর অভিযোগ উঠল পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের বিরুদ্ধে। পাকিস্তানের একটি সন্ত্রাস বিরোধী আদালতের বিচারক আইএসআইয়ের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলেছেন। প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেফতারের পরে গত বছরের মে মাসে তাঁর সমর্থকরা সামরিক বাহিনীর উপর হামলা চালিয়েছিল। সেই সংক্রান্ত মামলার শুনানি করছেন একটি সন্ত্রাস বিরোধী আদালতের বিচারক। তাঁর অভিযোগ, নিজেদের পক্ষে রায় পাওয়ার জন্য আইএসআই তাঁকে এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করছে। যদিও পাকিস্তানে বিচারক বা বিচারপতিদের উপর চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ গুপ্তচর সংস্থার বিরুদ্ধে এই প্রথম নয়, এর আগেও হাইকোর্টের বিচারপতিরা আইএসআইয়ের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ তুলেছিলেন।
আরও পড়ুন: অবৈধ বিয়ের দায়ে কারাবন্দি ইমরান খানের পাল্টা মামলার রায় অঘোষিতই রইল
জানা যাচ্ছে, সারগোধার সন্ত্রাস বিরোধী আদালতের ওই বিচারকের নাম হল মহম্মদ আব্বাস। আইএসআইয়ের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে তিনি লাহোর হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মালিক শাহজাদ আহমেদ খানকে একটি চিঠি লিখেছেন। তাতে উল্লেখ করেছেন, গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই কীভাবে নিজেদের পক্ষে রায় পাওয়ার জন্য তাঁকে এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করেছে।
উল্লেখ্য, ওই বিচারক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও সাংসদ ওমর আইয়ুবের তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে ওঠা সামরিক বাহিনীর ওপর হামলা সংক্রান্ত মামলার শুনানি করছেন। এর আগে আইয়ুব অভিযোগ তুলেছিলেন, সন্ত্রাস বিরোধী আদালতের বিচারককে আইএসআই অপহরণ করেছে। এরপর বিচারক নিজেই গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলায় দেশটিতে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। জানা যাচ্ছে, এই সংক্রান্ত চিঠি পাওয়ার পরেই লাহোর হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আহমেদ খান বৃহস্পতিবার পাঞ্জাব পুলিশের আইজি ডঃ উসমান আনোয়ারকে তলব করেন। তাতে আইজি আনোয়ার হাইকোর্টকে জানিয়েছেন, বিচারককে দেওয়া গুরুতর হুমকি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
প্রধান বিচারপতি আইজিকে জিজ্ঞাসা করেন, বিচারক আইএসআইয়ের অফিসারের সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকার করা সত্ত্বেও কেন সন্ত্রাস বিরোধী আদালতে যাওয়ার রাস্তাগুলি পুলিশ বন্ধ করে দিয়েছিল? তার উত্তরে পুলিশ করতে জানান, বিচারক গুরুতর হুমকির সম্মুখীন হওয়ায় রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই সংক্রান্ত মামলায় রায় সংরক্ষণ রেখেছেন প্রধান বিচারপতি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত মার্চ মাসে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের ৬ জন বিচারক সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের (এসজেসি) কাছে গোয়েন্দা সংস্থার নাক গলানোর অভিযোগ তুলেছিলেন। মোট ৬ জনের মধ্যে ৬ জন বিচারক সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সদস্যদের কাছে একটি চিঠি লিখেছিলেন। তাতে বিচারপতিরা তাঁদের আত্মীয়দের অপহরণ এবং হয়রানির পাশাপাশি গোপনে নজরদারি চালানোর অভিযোগ তুলেছিলেন আইএসআইয়ের বিরুদ্ধে। হাইকোর্টের বিচারপতিরা তখন সর্বসম্মতভাবে স্বীকার করেছিলেন, যে গোয়েন্দা সংস্থাগুলি তাঁদের কাজে হস্তক্ষেপ করছে। বিচার বিভাগের কাজে আইএসআইয়ের হস্তক্ষেপের ঘটনায় তীব্র নিন্দা করেছে পিটিআই।