এবার একজোট হয়ে কাজ করছে ইসলামিক স্টেট-খোরাসান প্রভিন্স এবং লস্কর-ই-তৈবার মতো জঙ্গি গোষ্ঠী। এমনটাই খবর গোয়েন্দা সূত্রের। আর যার জেরে উদ্বেগ বেড়েছে ভারতের। সূত্রের খবর, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই দুটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে একত্রিত করেছে। এই জোটকে কেবল আফগানিস্তানের বেলুচ বিদ্রোহী এবং তালেবান-বিরোধী গোষ্ঠীগুলির জন্যই হুমকি নয়, বরং জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ পুনরুজ্জীবিত করার পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা গেছে, আইএসকেপির বেলুচিস্তান সমন্বয়কারী মীর শফিক মেঙ্গাল লস্কর-ই-তৈবার সিনিয়র কমান্ডার রানা মহম্মদ আশফাককে একটি পিস্তল উপহার দিচ্ছে। এই ছবিটি প্রমাণ করে যে দুটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে সমন্বয় তৈরি হয়েছে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলির মতে, এই পুরো ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে রয়েছে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। বেলুচিস্তানের প্রাক্তন তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী নাসির মেঙ্গালের ছেলে মীর শফিক মেঙ্গালকে দীর্ঘদিন ধরে আইএসআই-এর 'প্রাইভেট ডেথ স্কোয়াড' নেতা হিসেবে বলা হয়। ২০১৫ সাল থেকে, তিনি আইএসকেপির প্রধান অর্থায়নকারী এবং অস্ত্র সরবরাহকারী। পাকিস্তানের নিজস্ব তদন্তকারী সংস্থাগুলির ২০১৫ সালের জেআইটি রিপোর্টেও তার নাম ছিল। অন্যদিকে, রানা মহম্মদ আশফাক হল লস্কর-ই-তৈবার বর্তমান নাজিম-ই-আলা, যে পাকিস্তানজুড়ে নতুন জঙ্গি প্রশিক্ষণ এবং মগজ ধোলাই কেন্দ্র খোলার নেপথ্যে রয়েছে।
আরও পড়ুন-কাউন্টডাউন শুরু! বুধবার থেকে UPI লেনদেনে বিরাট পরিবর্তন, নতুন নিয়ম কী?
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, আইএসআই-এর সহায়তায়, আইএসকেপি মাস্তুং এবং খুজদার জেলায় দুটি প্রধান অপারেশনাল ঘাঁটি তৈরি করেছে। মীর মেঙ্গাল এই শিবিরগুলির দায়িত্বে আছে এবং তার মাধ্যমে অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ করা হয়। ২০২৫ সালের মার্চ মাসে, বেলুচ বিদ্রোহীরা মাস্তুং শিবিরে আক্রমণ করে এবং ৩০ জনেরও বেশি আইএসকেপি জঙ্গিকে হত্যা করে। এরপর আইএসআই এই বিষয়ে লস্কর-ই-তৈবাকে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার নির্দেশ দেয়। ২০২৫ সালের জুন মাসে, লস্কর-ই-তৈবা প্রধান রানা আশফাক ব্যক্তিগতভাবে বেলুচিস্তানে আসে এবং সেখানে একটি জিগরা (সমাবেশ) আয়োজন করে। সেখানে বেলুচ বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করা হয়। লস্কর-ই-তৈবার ডেপুটি সাইফুল্লাহ কাসুরিও ঘোষণা করে যে পাকিস্তান বিরোধীদের নির্মূল করা হবে। গোয়েন্দা সূত্রের মতে, আইএসকেপির প্রচারণামূলক ম্যাগাজিন, ইয়ালগারের সাম্প্রতিক সংখ্যাগুলিতে কাশ্মীরে অভিযান বৃদ্ধির আহ্বান জানানো হয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে পাকিস্তান এখন এই জোটকে ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে চাইছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে আইএসআই এখন তার হাইব্রিড যুদ্ধের এজেন্ডা এগিয়ে নিয়ে যেতে বিভিন্ন মতাদর্শের সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে একত্রিত করে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করছে।
আরও পড়ুন-কাউন্টডাউন শুরু! বুধবার থেকে UPI লেনদেনে বিরাট পরিবর্তন, নতুন নিয়ম কী?
সূত্রের খবর, লস্কর-ই-তৈবা এবং আইএসকেপির মধ্যে এই নতুন জোট দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি। পাকিস্তানের আইএসআই এখন এই সংগঠনগুলিকে কেবল আফগানিস্তানের মধ্যে বেলুচ বিদ্রোহী এবং তালেবান-বিরোধী গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধেই ব্যবহার করছে না, বরং কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ পুনরুজ্জীবিত করতে মদত দিচ্ছে। বেলুচিস্তানের এই ছবি এবং জোট পাকিস্তানের নতুন এবং বিপজ্জনক সন্ত্রাসবাদী নীতিকে তুলে ধরছে, যেখানে রাষ্ট্র-স্পন্সর সন্ত্রাসবাদ এখন একটি অস্ত্রে রূপান্তরিত হয়েছে।